'বিদেশি আক্রমণকারীদের নাম মুছে ফেলতে কমিশন গঠন করুন'
ভারতের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ধর্মীয় স্থানগুলোর আসল নাম খুঁজে বের করে তাদের প্রকৃত নাম রাখার জন্য 'নামকরণ কমিশন' গঠনের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে বিভিন্ন স্থানের নামকরণ করা হয়েছে বিদেশী আক্রমণকারীদের নামে।
বিজেপি নেতা ও আইনজীবী অশ্বিনী কুমার উপাধ্যায়ের দায়ের করা আবেদনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে একটি 'নামকরণ কমিশন' গঠনের নির্দেশ দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টকে অনুরোধ করা হয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তর যেন পুরনো নাম প্রকাশ করে, সে নির্দেশ দিতে সুপ্রিম কোর্টকে অনুরোধ করা হয়েছে।
আবেদনকারী বলেন, (মুঘল গার্ডেন) ‘মুঘল উদ্যান’-এর নাম পরিবর্তন করে ‘অমৃত উদ্যান’ করা হয়েছে। কিন্তু বাবর রোড, হুমায়ুন রোড, আকবর রোড, জাহাঙ্গীর রোড, শাহজাহান রোড, বাহাদুর শাহ জাফর রোডের মতো হানাদারদের নামে রাস্তার নামকরণের জন্য সরকার কিছুই করেনি।
এ প্রসঙ্গে আজ (রোববার) ‘সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন’-এর সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ কামরুজ্জামান রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘নাম পরিবর্তন কমিশন গড়ার দাবি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যে আবেদন করেছেন অশ্বিনী উপাধ্যায় তা বিজেপি নেতার পক্ষেই সম্ভব। কেননা তারা অন্ধ গেরুয়া রাজনীতি করেন বলেই আজকে দেশের সমস্ত সমস্যা থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য এ ধরণের অবান্তর দাবি তারা করছে। কারা বিদেশি, কারা দেশি, কারা দেশকে গড়েছে, আর কারা নিজেকে গড়ছে, নিজেকে গুছিয়ে নিচ্ছে তা আজকে মানুষের কাছে সবটাই পরিষ্কার।’ প্রধানমন্ত্রীর নাম না করে মুহাম্মাদ কামরুজ্জামান আরও বলেন, ‘যিনি নিজেকে চা-ওয়ালা, আমি ফকির, প্রয়োজনে ঝোলা নিয়ে চলে যাব বলেছিলেন, তিনি আজকে কত টাকার বিমান চড়েন, আর বাদশাহ আওরঙ্গজেব তিনি রাজকোষাগার থেকে কত টাকা নিতেন ইতিহাস তার আজও পর্যন্ত সাক্ষ্য বহন করছে। ফলে যারা লেখাপড়া শেখে না, নতুন প্রজন্মকে শিক্ষা দেওয়ার যাদের কোনও উদ্যোগ নেই, বেকারত্ব দূর করে নতুন প্রজন্মের হাতে কাজের সুযোগ তুলে দেওয়ার জন্য যাদের কোনও চেষ্টা নেই, তারাই নাম পরিবর্তনের চেষ্টা চালাচ্ছে’ বলেও ‘সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন’-এর সাধারণ সম্পাদক ও ‘ফ্রন্ট পেজ অ্যাকাডেমি’র চেয়ারম্যান মুহাম্মাদ কামরুজ্জামান মন্তব্য করেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, ভগবান কৃষ্ণ ও বলরামের আশীর্বাদে পাণ্ডবরা খাণ্ডবপ্রস্থকে ইন্দ্রপ্রস্থে (দিল্লি) রূপান্তরিত করেছিল, কিন্তু কৃষ্ণ, বলরাম, যুধিষ্ঠির, ভীম, অর্জুন, নকুল, সহদেব, কুন্তী, দ্রৌপদী এবং অভিমন্যুর নামে একটিও সড়ক, পৌরসভার ওয়ার্ড, গ্রাম বা বিধানসভা কেন্দ্রের নাম নেই। অন্যদিকে, বর্বর বিদেশি হানাদারদের নামে রাস্তাঘাট, পৌরসভার ওয়ার্ড, গ্রাম ও বিধানসভা ক্ষেত্র রয়েছে।
বিজেপি নেতা আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায়ের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে ওই বিষয়ে আবেদন করেছেন আইনজীবী অশ্বিনী কুমার দুবে। এতে বলা হয়েছে, ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগ গবেষণা করে এমন ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় স্থানগুলোর নামকরণ করুক যেখানে নামগুলো বিদেশী আক্রমণকারীদের নামে নামকরণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকেও তাদের ওয়েবসাইটে এই ধরনের জায়গার নাম উল্লেখ করার দাবি জানানো হয়েছে।
খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২৩/একে


