আইএসএফ’ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির বিরুদ্ধে চার্জশিট, হেনস্থা সমর্থন করি না- শুভেন্দু অধিকারী
 
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট বা ‘আইএসএফ’ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে ৩২ পাতার চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ।

কোলকাতা পুলিশের পেশ করা চার্জশিটে খুনের চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে ভাঙড়ের বিধায়ক পীরজাদা নওশাদ সিদ্দিকির বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও জনজীবন বিপর্যস্ত করা, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরের অভিযোগ যুক্ত করা হয়েছে ওই চার্জশিটে। আজ (বুধবার) ব্যাঙ্কশাল আদালতে নিউ মার্কেট থানার করা মামলায় নওশাদ সিদ্দিকিকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানান সরকারি আইনজীবী।

বিধায়ক ও ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা নওশাদ সিদ্দিকি প্রসঙ্গে আজ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী বলেন,  ‘রাজনৈতিক বিরোধ আইএসএফের সঙ্গে বিজেপির আছে। আমরা রাজনৈতিক বিচারধারা, আদর্শ, এজেন্ডা ও বক্তব্যের সঙ্গে একমত নই। আজকেও নই, কালকেও থাকবে না। কিন্তু যে কায়দায় একটা সম্মানীয় পীর সাহেবের পরিবারের মানুষের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির সঙ্গে করা হয়েছে এটা কেবলমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার পুলিশের পক্ষেই সম্ভব। আমাদের হিন্দুদের যেমন অনেক ধর্মস্থান, তীর্থস্থান রয়েছে, মুসলিমদের ক্ষেত্রেও আজমীর শরীফের মতো ফুরফুরা দরবার শরীফও অত্যন্ত একটি পবিত্র তীর্থ ক্ষেত্র। পীর আবুবকর সিদ্দিকি (রহ) সাহেব, তিনি মুসলিমদের কাছে খুব উচ্চ আসনে থাকেন। সেই পরিবারের সন্তানকে যেভাবে কার্যত তার টুপি ধরে টানাটানি করা হয়েছে আপনারা লাইভে দেখিয়েছেন, এটা আমরা সমর্থন করি না। আমরা সমর্থন করি না, যেভাবে মিথ্যা মামলায় এক মাসের কাছাকাছি তাকে আটকে রাখা হয়েছে, মিথ্যা এফআইআর, নানাভাবে সাজিয়ে যেভাবে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে একেও আমরা সমর্থন করি না, কারণ উনি চোর, ডাকাত, গুণ্ডার পর্যায়ে পড়েন না। তাকে আইনের আওতায় এনেও অন্যভাবে ব্যবহার করা যেত।’

ভাঙড়ের সাবেক বিধায়ক আরাবুল ইসলামের নাম না করে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী আরও বলেন, ‘ওখানকার প্রাক্তন বিধায়ক যিনি একটা ইলেকট্রনিক চ্যানেলের মহিলা সাংবাদিকের হাত ধরে টানাটানি করেছেন, বুম কাড়িয়ে নিয়েছেন, সেই প্রাক্তন বিধায়ক গুন্ডামিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, যদি নওশাদ সিদ্দিকি ও তার পার্শ্বচরদেরকে গ্রেফতার করা হয় আইন ভঙ্গের জন্য, তাহলে ওখানকার গুণ্ডা, প্রাক্তন বিধায়ক তার এবং তৃণমূলের গুণ্ডাদেরও সমানভাবে জেলের ভিতরে রাখা উচিত ছিল। তাহলে বুঝতাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলতন্ত্র করছেন না, রাজধর্ম পালন করছেন’ বলেও মন্তব্য করেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী।  

অন্যদিকে, আজ (বুধবার) আদালতে যাওয়ার পথে বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি বলেন,‘‘আমার বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রমাণ দেখাতে পারবেন না, যেখানে কাউকে মারো, ধরো— এ সব বলছি। এমন একটি শব্দও বলিনি। যা চলছে, তা হেনস্থা ছাড়া আর কিছুই নয়। তবে এই হেনস্থা করে নওশাদ সিদ্দিকির আইএসএফকে বা বাংলার বঞ্চিত মানুষকে আটকাতে পারবে না।’  নওশাদের অভিযোগ, রাজ্য সরকার যে চক্রান্ত করছে, তা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।’ 

গত ২১ জানুয়ারি, আইএসএফের প্রতিষ্ঠা দিবসে কোলকাতার ধর্মতলায় যাওয়ার পথে ভাঙড়ের হাতিশালায় তৃণমূলের সঙ্গে আইএসএফ কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনার প্রতিবাদ জানানোকে কেন্দ্র করে কোলকাতায় পুলিশের সঙ্গে আইএসএফ সমর্থকদের সংঘর্ষ হলে গ্রেফতার হন ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি ও তার কিছু কর্মী-সমর্থক।
খবর পার্সটুডে/ এনবিএস/২০২৩/একে

news