মুসলিমদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করলে সংবিধান লঙ্ঘন হবে : ওয়াইসি

ভারতের মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমিন (মিম) প্রধান ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এমপি বলেছেন, 'সংবিধান কার্যকর করার সময়, আমাদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে আমাদের শরীয়তে হস্তক্ষেপ করা হবে না। মুসলিমদের সংস্কৃতিকে পূর্ণ সুরক্ষা দেওয়া হবে।’

আজ (শনিবার) হিন্দি গণমাধ্যম ‘জি নিউজ’সূত্রে প্রকাশ, ওয়াইসি বলেছেন, ‘আমার হিজাব, সংস্কৃতি, দাড়ি, নামাজ, বিয়ে, তালাক- এই সবকিছু সংবিধানের ২৯ অনুচ্ছেদের অংশ। সরকার এ সব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এটা করা সংবিধানের লঙ্ঘন হবে।’  

‘এবিপি নিউজ’ সূত্রে প্রকাশ, হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন শহরে যে সহিংস ঘটনা ঘটেছে সে জন্য বিজেপিকে নিশানা করে ওয়াইসি বলেছেন, বিজেপি ভারতের মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছে। এমন কোনো দিন যায় না যেদিন মুসলিমদের টার্গেট করা হয় না। 

গণমাধ্যমে প্রকাশ, ওয়াইসি মুসলিমদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আমি বাস্তবতা বলছি যে আপনারা (মুসলিমরা) শাসন ক্ষমতা পরিবর্তন করতে পারবেন না। সরকার পরিবর্তনের ক্ষমতা আপনাদের নেই। সেজন্য নেতৃত্বে পরিবর্তন আনতে হবে।

ওয়াইসি বলেন, বিজেপি আজকাল ‘অভিন্ন দেওয়ানি বিধি’নিয়ে কথা বলে। আমি জিজ্ঞাসা করি আপনারা কী ‘হিন্দু বিবাহ আইন’পরিবর্তন করবেন? আমি বিজেপি-সংঘ এবং যারা মুসলিমদের ঘৃণা করে তাদের বলব যে আপনারা ভারতকে ঘৃণা করছেন। দুই সন্তানের আইন দেশের ক্ষতি করবে। দেশে মোট প্রজনন হার কমছে। সরকারের প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে। এই লোকেরা বলে যে মুসলিমরা অনেক বিয়ে করে, কিন্তু ১৯৭৬ সালে একটি সমীক্ষা হয়েছিল যা রিপোর্ট করেছিল যে সর্বাধিক সংখ্যক হিন্দু দু’টি বিয়ে করেছে। আজও, ২০২২ সালের জরিপ করুন এবং জিজ্ঞাসা করুন কার দু’টি স্ত্রী আছে? 

ওয়াইসি বলেন, ‘আমরা যখন স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশ নিচ্ছিলাম, তখন আমাদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে আমাদের শরীয়তে হস্তক্ষেপ করা হবে না। এখন যখন কোনো ধর্মের মিছিল হয়, তা হনুমান জয়ন্তী মিছিল হোক, রামনবমী বা গণেশ জয়ন্তী মিছিল হোক, আমার অনুরোধ মসজিদের উপরে হাই রেজুলেশনের সিসিটিভি লাগিয়ে ফেসবুকে লাইভ করুন, যাতে পৃথিবী জানতে পারে কারা পাথর নিক্ষেপ করেছে? মসজিদ এবং দরগাহে উচ্চ-রেজোলিউশন সিসিটিভি স্থাপন করার জন্য আপনাদের অনুরোধ করা হচ্ছে।’    

ওয়াইসি দেশের বিরোধী বিভিন্ন দল ও বিশেষকরে উত্তর প্রদেশের সমাজবাদী পার্টিকে নিশানা করে বলেন, মোদি আমার ভোটে নয়, আপনাদের ভোটে জিতছেন। আমার ভোটে আপনাদের সম্মান রক্ষা হচ্ছে। উত্তর প্রদেশের মুসলিমরা যদি অনুগ্রহ করে সমাজবাদী পার্টিকে ভোট না দিত, তাহলে কী অখিলেশ যাদব (সমাজবাদী পার্টির প্রধান) বাড়ি থেকে মুখ বের করতে পারতেন?  

‘ভারতের মুসলিমদের তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক নেতৃত্ব তৈরি করা উচিত। যতক্ষণ না মুসলিমরা তাদের প্রতিনিধিদের নির্বাচন না করবে বিদ্বেষের ঝড় থামবে না’ বলেও মন্তব্য করেন ‘মিম’প্রধান ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এমপি মন্তব্য করেন।খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে

news