বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন বাচ্চাকে বিমানে উঠতেই দিল না ইন্ডিগো! সে নাকি ‘আতঙ্কের কারণ’, দাবি ম্যানেজারের

  বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন একটি বাচ্চাকে পরিবারের সঙ্গে ফ্লাইটে উঠতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠল ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের (Indigo) বিরুদ্ধে। শনিবার রাঁচি এয়ারপোর্টের এই ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়া মারফত সামনে আসতেই প্রতিবাদের ঝড় বয়ে গেছে। চাপের মুখে বিবৃতি দিয়ে ইন্ডিগো কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, ওই বাচ্চাটি নাকি অন্য যাত্রীদের ‘আতঙ্কের কারণ’ হয়ে দাঁড়িয়েছিল!

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, ওই বিমানেরই সহযাত্রী, মনীষা গুপ্ত নামের এক মহিলা গোটা ঘটনাটি ফেসবুকে লিখেছেন। তিনি জানিয়েছেন, দীর্ঘক্ষণ গাড়িতে জার্নি, বসে থাকা, সিকিউরিটি চেক– এই সবটা মিলিয়ে বাচ্চাটি একটু অধৈর্য হয়ে উঠেছিল। তার বাবা-মা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছিল যথেষ্ট দক্ষভাবেই। অন্যান্য যাত্রীরাও সহযোগিতা করছিলেন।
কিন্তু ঘটনাস্থলে উপস্থিত ইন্ডিগোর এক ম্যানেজার সমানে চিৎকার করছিলেন এবং জোরে জোরে সবাইকে বলছিলেন, ‘বাচ্চাটিকে সামলানো যাচ্ছে না, ওর জন্য সবাই অসুবিধায় পড়ছে!’ মনীষা জানিয়েছেন, কারও কোনও অসুবিধা হয়নি বাচ্চাকে নিয়ে, একমাত্র অসুবিধা ছিল অসহিষ্ণু ম্যানেজারের চেঁচামেচি। 
এমনকি, ওই বিমানে (Indigo) একদল চিকিৎসক যাচ্ছিলেন, তাঁরাও জানান, বাচ্চাটিকে তাঁরা দেখবেন, বাবা-মাকে আশ্বাস দেন, মাঝআকাশে কোনও সমস্যা হলেও তাঁরা সাহায্য করবেন। মনীষা গুপ্ত একথাও জানিয়েছেন তাঁর ফেসবুক পোস্টে। বিমানের বেশিরভাগ সহযাত্রীই ওই পরিবারটির প্রতি এবং বাচ্চাটির প্রতি সহমর্মী ছিলেন বলে লিখেছেন তিনি। এমনকি অনেকেই মোবাইল খুলে দেখাচ্ছিলেন, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কোনও যাত্রীর প্রতি এমন অসহনীয় আচরণ করা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের কী নির্দেশ রয়েছে।
অভিযোগ, তার পরেও ৪৫ মিনিট ধরে চলতে থাকে ঝামেলা, রাগারাগি। বিমান কর্তৃপক্ষ ক্রমাগত দাবি করতে থাকে, ওই বাচ্চাটিকে নিয়ে বিমানে চড়া যাবে না। বাচ্চাটি সকলের জন্য ‘আতঙ্ক’। বাচ্চাটির পরিবার একবারের জন্যও মেজাজ হারাননি, বা কোনও খারাপ কথা বলেননি একথাও আলাদা করে উল্লেখ করেছেন মনীষা।

কিন্তু ইন্ডিগোর তরফে এর পরেও দাবি করা হয়, ‘যাত্রীদের সুরক্ষার কথা ভেবেই এক বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন বাচ্চাকে তার পরিবারের সঙ্গে উঠতে দেওয়া হয়নি বিমানে। কারণ শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কর্মীরা বাচ্চাটিকে শান্ত করার চেষ্টা করে, কিন্তু তা সম্ভব হয় না।’ 
শেষমেশ ওই পরিবার পরের দিনের ফ্লাইটের টিকিট কাটতে বাধ্য হয়। তাদের থাকার ব্যবস্থা করে দেয় ইন্ডিগো (Indigo)।
ঘটনার কথা জানাজানি হতেই ছিছিক্কার পড়ে গেছে সব মহলে। ইন্ডিগো কর্তৃপক্ষের আচরণ কোনওভাবেই সমর্থনযোগ্য নয় বলেই মত রেখেছেন বেশিরভাগ মানুষ। যদিও নিজেদের বক্তব্য অনড় ইন্ডিগো। তারা জানিয়েছে, ইন্ডিগো বিভাজনে বিশ্বাস করে না, তা কর্মচারীদের জন্য হোক বা যাত্রীদের জন্য। ফলে বাচ্চাটিকে বিমানে না নেওয়ার কোনও উদ্দেশ্য ছিল না তাদের। কেবল ‘নিরাপত্তা’র কথা ভেবেই এই কাজ করেছে তারা। খবর দ্য ওয়ালের /এনবিএস/২০২২/একে

news