জবির ছাত্রী হলে খাবার পানির সমস্যা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের মৌলিক সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। গ্যাস না থাকা, লিফট সমস্যা, মানসম্মত খাবারের অভাবের পাশাপাশি এবার যুক্ত হয়েছে খাবার পানি নিয়ে সমস্যা। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ১৬ তলাবিশিষ্ট এই হলের বেশ কয়েকটি ফ্লোরের পানির ফিল্টার নষ্ট হয়ে আছে।
আর যেই ফিল্টারগুলো ভালো আছে অত্যাধিক চাপে সেগুলোও ধীরে পানি ফিল্টারেশন করছে৷ এতে অনেকে বাধ্য হয়ে ডাইনিং এর পানি খাচ্ছে।আবার অনেকে বাইরে থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করছে৷ তবে ছাত্রীদের অভিযোগ ডাইনিংয়ের পানি পুরোপুরি বিশুদ্ধ না। সমস্যা সমাধানে ছাত্রীরা কর্তৃপক্ষকে জানালেও এখনক মিলেনি সমাধান। এতে বিপাকে পড়েছেন তারা।
জানা যায়, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হলের নিচতলার ডাইনিংয়ে ১টি পানির ফিল্টার, তিনতলা থেকে ১৬ তলা পর্যন্ত প্রতি ফ্লোরে ছাত্রীদের জন্য ছোট ১টি ফিল্টারের ব্যবস্থা রয়েছে। হলের প্রায় ১৬০০ ছাত্রীর জন্য পানির ফিল্টার আছে মাত্র ১৪টি। আর প্রতি ফ্লোরের প্রায় অর্ধ শতাধিক ছাত্রীর বিপরীতে একটি ফিল্টার অপ্রতুল হওয়ায় সবসময় ফিল্টারগুলোর ওপরে অত্যাধিক চাপ থাকে।
প্রায় এক সপ্তাহ ধরে তিন তলা থেকে দশ তলা পর্যন্ত থাকা পানির ফিল্টার নষ্ট হয়ে রয়েছে। যাতে অনেক ছাত্রী বাধ্য হয়ে নিচ থেকে উপরের তলায় থাকা ফিল্টার থেকে পানি সংগ্রহ করছে আবার অনেকে বাইরের পানি কিংবা ডাইনিং এর ফিল্টারের পানি খাচ্ছে। তবে ডাইনিং এর পানি খেয়ে অনেক ছাত্রী ভুগছেন অ্যালার্জি জনিত সমস্যায় আবার অনেকের শরীরে ফুসকুড়ি পড়েছে। কবে নাগাদ এই সমস্যা সমাধান হবে সেটিও অনিশ্চিত।
ছাত্রীদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের কাছে এসব সমস্যার কথা জানালে তারা সব শুনে খালি দরখাস্ত দিতে বলে। দরখাস্ত দিলে দেখি বলেই সময়ক্ষেপণ করেন সংশ্লিষ্টরা। সহসায় কোন উদ্যোগ নেয়না। খাবারের পানির জন্যও বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে এখন। আর তদারকির দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের অনেক সময় পাওয়াই যায়না সমস্যা জানানোর জন্য।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি আয়রনযুক্ত পানি পান করলে কিংবা বিশুদ্ধ পানি পান করতে না পারলে হাড়ে ইনফেকশন, লিভার সিরোসিসসহ মানব দেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রতঙ্গের মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হয়। মানবদেহের এই ক্ষতি ধীরে ধীরে হয় বলে সহসাই টের পাওয়া যায় না।
হলের আবাসিক ছাত্রী ফারহানা করিম (ছদ্মনাম) বলেন, ফিল্টার প্রয়োজনের বিপরীতে অনেক কম৷ তার ওপর বেশ কিছু নষ্ট হয়ে আছে৷ এখন বাধ্য হয়েই ৩ তলা থেকে ১২ তলায় যেতে হয় পানি আনতে। ভিড় থাকে স্বাভাবিকভাবেই। দুই দিন ডাইনিং এর পানি খেয়েছিলাম৷ এরপর শরীরে অ্যালার্জি বাড়ে। শুধু ফিল্টার ঠিক করলেই হবেনা বরং বাড়াতে হবে৷ তাতে ফিল্টারেও চাপ কম পড়বে, আমাদের জন্যও সুবিধা হবে।
অপর এক আবাসিক ছাত্রী বলেন, রাতের বেলায় বেশি বিড়ম্বনায় পড়তে হয়৷ ৯,১০তলায় গিয়েও দেখি ওইখানের ফিল্টারের একই অবস্থা। হলে না আছে মানসম্মত খাবার না আছে ভালো পরিবেশ তার ওপর এখন পানি নিয়েও সমস্যা শুরু হয়েছে। এটা দ্রুত সমাধান করা উচিত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামীমা বেগম আমাদের নতুন সময়কে বলেন, বিষয়টি সমাধানে যথাযথ উদ্যোগ নেয়া হবে। আমার শরীরটা আজ খারাপ। পরে কথা বলব।
এনবিএস/ওডে/সি


