ব্রেক্সিটের লাল ফিতা ও মহামারীর কারণে ধ্বংসের মুখে ব্রিটেনের ভাষা স্কুলের চাকরি খাত
ব্রিটিশ ট্যুরিজম অ্যালায়েন্সের প্রতিবেদনে ভলা হয়, প্রায় ৩.৩ বিলিয়ন পাউন্ডের শিল্পখাতের ভবিষ্যত হুমকির মুখে রয়েছে, ঝুঁকিতে পড়েছে ৪০ হাজার চাকরি।
সরকার কোভিডজনিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও মন্ত্রীরা ফ্রান্স, জার্মানি এবং অন্যান্য ইইউ দেশগুলোর শিশুদের ওপর অপ্রয়োজনীয় বিধি-নিষেধ আরোপ করেছেন। এর ফলে ব্রিটেনের ইংরেজি ভাষা শিক্ষা স্কুলগুলোতে ভর্তিতে প্রভাব পড়েছে এবং এই শিল্পে আনুমানিক ৮০ ভাগ রাজস্ব হ্রাস পেয়েছে।
২০২১ সাল পর্যন্ত প্রায় ১.৫ মিলিয়নেরও বেশি শিশু প্রতিবছর ইংরেজি পড়তে বা গ্রুপ সফরে যুক্তরাজ্যে আসতো, যা দেশটির মোট বার্ষিক পর্যটন আয়ের প্রায় ১১ শতাংশ। ব্রেক্সিটের আগে এই শিশুরা শুধুমাত্র আইডি কার্ড ব্যবহার করে ভ্রমণ করতে পারতো। কিন্তু এখন এই শিশুদের পাসপোর্ট থাকতে হবে এবং শরণার্থী সহ অ-ইইউ ভুক্ত শিশুদের মতো ৯৫ পাউন্ড মূল্যের ভিসা থাকতে হবে। ফলে স্কুলগুলো ইংরেজি ভাষা শিক্ষা সফরের জন্য আয়ারল্যান্ড বা মাল্টায় যাচ্ছে বা সফর বন্ধ করে গিয়েছে।
ব্রিটেনের বেশিরভাগ ভাষা স্কুলগুলোই হচ্ছে ইংল্যান্ডের দক্ষিণ উপকূলের সমুদ্রতীরবর্তী শহরগুলোতে। হেস্টিংসের কাউন্সিল জানায় তাদের ২০টি ভাষা স্কুল ও ট্যুর অপারেটরগুলোর মধ্যে এখন মাত্র সাতটি চলছে। এর মধ্যে একটি সেনলাক ট্যুর, এটি প্রতি বছর প্রায় ১৫ হাজার শিশুকে নিয়ে আসে। বেশিরভাগ শিশুই আসে বার্লিন থেকে। তারা স্থানীয় পরিবারের সঙ্গে থাকে, ইংরেজি এবং ব্রিটিশ সংস্কৃতি শেখে।
নির্বাহী কর্মকর্তা নিকোল ট্যাগেব বলেন, ২০২০ সালের মার্চ থেকে আমাদের কোনো গ্রুপ নেই। অনেক কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে। প্রথমে ব্রেক্সিট, তারপর কোভিড আর ইউক্রেন যুদ্ধ। হেস্টিংস ব্যুরো কাউন্সিল অনুসারে শহরের প্রায় ২২ শতাংশ চাকরি-৭ হাজার ৩০টি পর্যটন খাতের। কাউন্সিলের বিপণন ব্যবস্থাপক কেভিন বুরম্যান বলেন, ভাষা স্কুলগুলো স্থানীয় অর্থনীতিতে ৩৫ মিলিয়ন পাউন্ডের অবদান রাখে। হেস্টিংস দক্ষিণ পূর্ব ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বঞ্চিত শহর। এই শহরের মূল অর্থনৈতিক খাতই ছিলো পর্যটন। ভাষা স্কুলের শিক্ষার্থী হারানোয় পুরো শহরে প্রভাব পড়েছে।
ভাষা স্কুলের বাণিজ্য সংস্থা ইংলিশ ইউকে এর সদস্যপদ পরিচালক হুয়ান জাপেস বলেন, ১৫ শতাংশ সদস্য স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বাকি ১৫ শতাংশ অনিশ্চিত অবস্থায় রয়েছে।