সশস্ত্র অভিযান নয়, শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় বাংলাদেশ

এসআর শিপিংয়ের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম শুক্রবার সন্ধ্যায় আমাদের নতুন সময়কে বলেন, জাহাজের ২৩ নাবিক ভালো আছেন। আমরা নাবিক শুধু নয়, তাদের পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করছি।

ইইউ’র জাহাজ প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা কোনো সহিংস অভিযান সমর্থন করি না। আমরা চেষ্টা করছি নাবিকদের অক্ষত ফিরিয়ে আনতে।

সূত্র জানায়, জলদস্যুদের সঙ্গে কেএসআরএম গ্রুপের কথাবার্তা চলছে। তবে এ ব্যাপারে এখনই কিছুৃ বলতে তারা নারাজ। জানতে চাইলে মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, আমি এটুকুই আপনাদের জানাতে চাই, নাবিকদের উদ্ধারের বিষয়টি সময়সাপেক্ষ।

জলদস্যুদের বিরুদ্ধে পরিচালিত অপারেশন আটলান্টার অংশ হিসেবে সোমালিয়ার উপকূলে রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেভাল ফোর্স (ইইউএনএভিএফওআর) আটলান্টার একটি যুদ্ধজাহাজ। গত ১২ মার্চ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি জলদস্যুরা দখল করে নেওয়ার পর থেকেই ইইউ’র যুদ্ধজাহাজ নজর রেখেছে বাংলাদেশী জাহাজটির ওপর। ইইউএনএভিএফওআর অপহৃত জাহাজটিতে অভিযান চালাতে চেয়েছিলো, কিন্ত শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রত্যাশা করছে জাহাজের মালিকপক্ষ এস আর শিপিং। তাই অভিযানে সম্মত হয়নি বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া বারোটার দিকে অপারেশন আটলান্টার এক্স হ্যান্ডেলে ইইউ নেভাল ফোর্সের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা অপহৃত এমভি আবদুল্লাহর কাছাকাছি গেছেন। এ দূরত্ব কয়েক নটিক্যাল মাইল হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পোস্টে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ও তিনটি স্থিরচিত্র প্রকাশ করা হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, ইইউ নেভাল ফোর্সের যুদ্ধজাহাজ থেকে এমভি আবদুল্লাহকে দেখা যাচ্ছে। সেদিকে উড়ে যাচ্ছে ইইউ নেভীর একটি হেলিকপ্টার।

তিনদিন আগে (২০ মার্চ) জলদস্যুরা এমভি আবদুল্লাহর মালিক প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। কেএসআরএম গ্রুপের সহযোগী এই শিপিং কোম্পানির সঙ্গে জলদস্যুদের কী কথা হয়েছে, কৌশলগত কারণে তা প্রকাশ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। সরকারের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, এ ধরনের ঘটনায় আগাম কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয় না।

সরকারের পক্ষ থেকে আরো বলা হয়েছে, জাহাজ ও নাবিকদের যে কোনো মূল্যে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে। তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে সমাঝোতার উদ্যোগের কথাও জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

গত ৪ মার্চ বাংলাদেশের কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানাধীন এস আর শিপিংয়ের এমভি আবদুল্লাহ মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওনা দেয়। ১২ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে খবর আসে, ভারত মহাসাগরে জাহাজটি ছিনতাই হয়েছে। ছিনতাইর পর একবার অবস্থান বদল করে উত্তরে সরে যায় এমভি আবদুল্লাহ।  

বাংলাদেশী জাহাজটি ছিনতাই হওয়ার সময় থেকেই এটিকে পর্যবেক্ষণে রেখেছে ভারতীয় নৌবাহিনী। তারা এরই মধ্যেই জলদস্যুদের ব্যবহৃত জাহাজ এমভি রুয়েনের গতিরোধ করে জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ভারতীয় নৌবাহিনীর মুখপাত্র এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছেন, রুয়েনে থাকা ৩৫ জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেছে। ১৭ নাবিককে উদ্ধার করা হয়েছে।

news