মোজতাবা খামেনি কি ইরানের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট: নিউইয়র্ক টাইমসের বিশ্লেষণ

গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইয়র্কটাউন ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো সাই খাতিরি বলেন, আগের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতাদের যুক্তি ছিল, শাহ আমলের উত্তরাধিকার আইন ইরানে চলবে না। কিন্তু এখন প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যুর পর ইরানে বংশগত নেতৃত্ব সামনে আনার একটি সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে। 

তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে রাইসির যে পারফরম্যান্স ছিল, তাতে খামেনির উত্তরসূরি হতে পারবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। রাইসির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে অনেকে খামেনির ছেলে ৫৫ বছর বয়সী মোজতাবাকে দেখেন। কিন্তু রাজতন্ত্রের নিয়ম সেখানে নেই বলে তিনি ওই পদে আসতে পারবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে।

মোজতাবা খামেনি নিজেও একজন ধর্মীয় নেতা। তিনি দেশটির ধর্মীয় নেতাদের মধ্যও জনপ্রিয়। এখন এই কাউন্সিল তাদের মধ্য থেকে একজনকে বেছে নেবেন, নাকি সবাই যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করবেন, তা এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

রাইসির মৃত্যুতে মোজতাবা খামেনির জন্য বাবার উত্তরসূরি হওয়ার পথ সুগম হচ্ছে। কিন্তু ইরানের ধর্মীয় ও অভ্যন্তরীণ রাজনীতির বিষয়টি অনেকটাই রহস্যজনক। এই সিদ্ধান্ত এখন দেশটির জ্যেষ্ঠ ধর্মীয় নেতাদের একটি কাউন্সিলের হাতে।

রাইসির মৃত্যুর আগে থেকেই ইরানের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছিল। ৮৫ বছর বয়সী খামেনির স্বাস্থ্য ক্রমেই খারাপ হতে শুরু করায় দেশটির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কোন দিকে যাবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল।

ধারাবাহিক পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা, পশ্চিমা দেশগুলোর ইরানের অভ্যন্তরে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্যে অভ্যন্তরীণ বিক্ষোভ, অর্থনীতির গতি রোধ ও ইসরায়েলের সঙ্গে উত্তেজনার মতো বিষয়গুলো মোকাবিলা করে আসছে ইরানের নেতারা। রাইসির মৃত্যুতে দেশটির রাষ্ট্রীয় নীতিতে খুব বেশি পরিবর্তন আসবে না বলেই মনে করেন বিশ্লেষকেরা।

গবেষণা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ইরানবিষয়ক পরিচালক আলী ভায়েজ বলেন, ইরানের রাষ্ট্রীয়পদ্ধতি ইতিমধ্যে একটি পথে চলছে, যাতে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার পরিবর্তন হলেও তা ভবিষ্যতের নির্দিষ্ট লক্ষ্যের পথেই এগোতে থাকবে। তিনি একে ‘কট্টরপন্থী দৃষ্টিভঙ্গি’ বলে উল্লেখ করেন। এর আওতায় দেশটির পররাষ্ট্রনীতি, আঞ্চলিক সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন ও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য যন্ত্রাংশ তৈরির লক্ষ্য থেকে তারা বিচ্যুৎ হবে না।

বিশ্লেষক ভায়েজ বলেন, যাকেই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট পদে বসানো হোক, তাকে এই দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।

ইউরোপিয়ান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনের ইরান বিশেষজ্ঞ এলি গেরানমায়েহ বলেন, রাইসি ইরানের শক্তিশালী রেভল্যুশনারি গার্ড ও সর্বোচ্চ নেতার পছন্দের বাইরে খুব কম প্রভাব ফেলতে পেরেছিলেন। তাই নতুন যিনি প্রেসিডেন্ট হবেন, তাকেও পররাষ্ট্রনীতি, আঞ্চলিক পরিস্থিতি ও পারমাণবিক কর্মসূচিতে ভূমিকা রাখার সুযোগ কমই দেওয়া হবে। সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি

news