ইউরোপের হাজার হাজার মানুষ এই মহাদেশের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভের মাধ্যমে গাজা ও লেবাননে ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞের নিন্দা করেছে।

শনিবার ইউরোপের জনগণ স্টকহোম, প্যারিস, বার্লিন ও রোমসহ এই মহাদেশের বিভিন্ন শহরে রাজপথে নেমে আসে এবং গাজা ও লেবাননে ইহুদিবাদী শাসকদের অমানবিক ও নৃশংস কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানায়। বিক্ষোভকারীরা ইসরাইলকে বয়কট করার জন্য তাদের দেশের কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানায়। পার্সটুডের রিপোর্ট ও আল জাজিরার খবর অনুযায়ী, সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে সমবেত বিক্ষোভকারীরা "হত্যাকারী ইসরাইল, ফিলিস্তিন থেকে বেরিয়ে যাও" এবং "অবিলম্বে ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি কর" প্রভৃতি স্লোগান দেয়।

কাজসা একিস একমান হচ্ছেন একজন সুইডিশ মানবাধিকার কর্মী। তিনি এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠানে বলেছেন, গাজা ও লেবাননে ইহুদিবাদী শাসকের বর্বর আগ্রাসন গণহত্যার শামিল এবং ইসরাইলের প্রতি পশ্চিমাদের অন্ধ সমর্থন তেল আবিবকে অমানবিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে বেপরোয়া করে তুলেছে।

প্যারিসেও ফিলিস্তিনি ও লেবাননের জনগণের সমর্থকরা ফরাসি সরকারকে তেল আবিবের প্রতি সমর্থন দেয়া বন্ধ করতে বলেছেন।

বার্লিনেও, ফিলিস্তিন ও লেবাননের জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইলি আগ্রাসন এবং তাদের প্রতি পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থনের নিন্দা জানিয়ে "গণহত্যায় অর্থায়ন বন্ধ করুন" এবং "ফিলিস্তিনের জন্য স্বাধীনতা" প্রভৃতি স্লোগান দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।

আয়ারল্যান্ডের জনগণও কাউন্টি ক্লেয়ার শহরের শ্যানন বিমানবন্দরের সামনে জড়ো হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলি সামরিক বিমানের জন্য জ্বালানি ভরা, অস্ত্র বহন এবং আয়ারল্যান্ডের আকাশসীমার উপর দিয়ে তাদের বিমানের উড্ডয়ন বা অবতরণের প্রতিবাদ জানায়।

ইহুদিবাদী শাসকের বর্বর অপরাধের প্রতিবাদে পর্তুগালের রাজধানী লিসবন থেকে এক বিশাল জনগোষ্ঠী রাস্তায় নেমে মিছিল করেছে।

ফিলিস্তিন ও লেবাননের জনগণের সমর্থনে ইতালির জনগণও রাজধানী রোমে রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভ করেছে।

এ ভাবে, গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইউরোপের বিভিন্ন শহরের জনগণ যুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে আসছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে, পশ্চিমা দেশগুলোর পূর্ণ সমর্থন নিয়ে, ইহুদিবাদী ইসরাইল গাজা উপত্যকা এবং জর্ডান নদীর পশ্চিম তীরের নিরস্ত্র ও নির্যাতিত ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।

সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে ৪২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছে এবং ৯৭ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছে।

অন্যদিকে, লেবাননে ইসরাইলের হামলায় দুই হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত এবং কমপক্ষে ১০ হাজার আহত হয়েছে।

১৯১৭ সালে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তির পরিকল্পনা গ্রহণ এবং এ লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইহুদিদের অভিবাসনের আনা হয়। এরপর ১৯৪৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে এর অস্তিত্ব ঘোষণা করা হয়েছিল। তারপর থেকে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা এবং তাদের সমগ্র ভূমি দখল প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।

তবে ইরানের নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি দেশ ইসরাইলি দখলদারিত্বের অবসান এবং ইহুদিদের যে যার দেশে ফেরত যাওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে আসছে।

news