গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের নিষেধাজ্ঞার ফলে জাতিসংঘের ত্রাণ কার্যক্রম বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্মসংস্থান সংস্থা (আনরোয়া) দীর্ঘদিন ধরে গাজার মানুষের জন্য জরুরি ত্রাণ সরবরাহ করছিল, তবে সম্প্রতি ইসরাইল এই সংস্থার কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যার ফলে সেখানে মানবিক সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে।

গাজার অনেক মানুষ, বিশেষ করে যারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত, তারা এই নিষেধাজ্ঞার ফলে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। গাজার নুসিরাত শিবিরের বাসিন্দা হানান আবু সাঈদ জানাচ্ছেন, তিনি উচ্চরক্তচাপের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ পাচ্ছেন না, যা তার এবং তার সন্তানের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। আরেক ফিলিস্তিনি মা, হুদা আল-হাত্তাব, তার ডায়াবেটিস আক্রান্ত ছেলের জন্য ইনসুলিন খুঁজে পাচ্ছেন না। তিনি বলছেন, "আমরা জানতে পারি যে সমস্ত আনরোয়া কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে, আর আমার ছেলে ইনসুলিন না পেলে তাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যায় নিতে হবে।"

এছাড়া, গাজার খাদ্য সংকটও চরম আকার ধারণ করেছে। ইসরাইলের বাধার কারণে গম এবং অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে, ফলে আনরোয়া’র গুদামগুলো খালি হয়ে গেছে, যা এই অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষুধা এবং দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, "ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আনরোয়া-এর বিকল্প নেই।" ১৯৪৯ সালে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থা এখন পর্যন্ত ৫৯ লাখ ফিলিস্তিনিকে স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং সামাজিক সেবা দিয়ে আসছে। তবে, ইসরাইলের নিষেধাজ্ঞার কারণে এখন এই সেবাগুলি থেমে গেছে, এবং গাজার জনগণ আজ মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে।

 

news