অবশেষে দীর্ঘ অপেক্ষার পর সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোরকে নিয়ে ফ্লোরিডা উপকূলের সমুদ্রে অবতরণ করল নাসার ক্যাপসুল। গতকাল রাতে এই ক্যাপসুল পৃথিবীতে ফিরে আসে, চমৎকার এই অভিজ্ঞান যেন ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়। সুনিতা এবং বুচ গত বছরের জুন থেকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) ছিলেন, যেখানে আট দিনের মিশনে যাওয়ার পর টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে তাদের প্রায় নয় মাস সেখানে আটকে থাকতে হয়।

নাসা ও স্পেসএক্সের যৌথ উদ্যোগে গত শুক্রবার তাদের উদ্ধার করার জন্য মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল একটি মিশন। আইএসএস পৃথিবী থেকে ৪০৯ কিলোমিটার উপরে অবস্থিত, আর সেখানে প্রায় ২৫ বছর ধরে পৃথিবী ও অন্যান্য দেশের নভোচারীরা আসা-যাওয়া করে আসছে। এই স্টেশনের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুতকৃত খাবারের ব্যবস্থা করা হয়, যাতে নভোচারীরা সুস্থভাবে তাদের মিশন শেষ করতে পারেন।

তবে এত দীর্ঘ সময় মহাকাশে থাকা, সুনিতা ও বুচের জন্য ছিল এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা। তারা যেসব খাবার খেতেন, তা ছিল প্যাকেটজাত বা শুকানো খাবার, যেগুলো পৃথিবী থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল। মজার ব্যাপার হলো, মহাকাশে তাজা ফল বা সবজি তেমন পাওয়া যায়নি। কিন্তু, শুরুর দিকে কিছু তাজা ফল থাকলেও তা তিন মাসের মধ্যে ফুরিয়ে যায়। এরপর তাদের খাদ্যতালিকায় থাকত সিরিয়াল, গুঁড়া দুধ, পিৎজা, রোস্ট মুরগি, চিংড়ি ককটেল, টুনা মাছ এবং বিভিন্ন ধরনের স্যুপ বা ক্যাসেরোল।

আইএসএসের বিশেষ ব্যবস্থায়, নভোচারীদের প্রস্রাব এবং ঘাম পুনর্ব্যবহার করে সুপেয় পানিতে পরিণত করা হতো, যা খাদ্য প্রস্তুতির জন্য ব্যবহৃত হতো। তবে, এতসব সীমাবদ্ধতার মধ্যেও, পুষ্টির দিকে নজর রেখে খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা হতো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুনিতা এবং বুচের ওজন কমেনি, কারণ মহাকাশে প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও খাবারের অভাব ছিল না।

এই মিশনের সফল সমাপ্তির জন্য নাসা এবং স্পেসএক্সকে ধন্যবাদ জানানো হয়, এবং তাদের "ক্রু-১০" মিশন সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়।

news