গাজার যুদ্ধের প্রকোপে একজন আট বছরের শিশু, সামা তুবাইল, হারিয়ে ফেলেছে তার সব কিছু। ৭ অক্টোবরের আগে তার জীবনে ছিল খুশির মুহূর্ত, লম্বা চুলে খেলা-ধুলা, আর হাস্যোজ্জ্বল দিন। কিন্তু সেই দিনগুলি এখন শুধুই স্মৃতি। ইসরায়েলি হামলায় গাজার জাবালিয়া থেকে পরিবারসহ তাদের পালাতে হয়। প্রথমে দক্ষিণ গাজার রাফাহে আশ্রয়, তারপর যুদ্ধের তীব্রতার কারণে খান ইউনিসে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেন তারা।

শুধু সামার জীবনই নয়, গাজার প্রায় ১২ লাখ শিশু আজ যুদ্ধের মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করছে। সামা, যাকে তার চুল হারানোর পর থেকে এক ভয়াবহ মানসিক চাপের মুখে পড়তে হয়েছে, তার কণ্ঠে এক চরম হতাশা। সে তার মা ওম-মোহাম্মদকে প্রশ্ন করে, "মা, আমি ক্লান্ত, আমি মরতে চাই। কেন আমার চুল গজাচ্ছে না?" তার জীবনে যুদ্ধের পরবর্তী এই পরিবর্তন আর সহ্য করতে পারছে না। একসময় খুশি থাকলেও এখন সে শুধুই হতাশ।

৭ অক্টোবরের হামলার পর তার চুল পড়ে যাওয়ার পেছনে ছিল এক গভীর মানসিক আঘাত, যা চিকিৎসকরা “নার্ভাস শক” হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। সামার জন্য এই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে যখন তার প্রতিবেশী শিশুরা তাকে নিয়ে বিদ্রূপ শুরু করে। সেই শত্রুতা এবং লজ্জায় সে ঘরবন্দি হয়ে পড়ে।

যুদ্ধবিরতি অবস্থা শিথিল হলেও সামার বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে, তাকে এখনও শরণার্থী শিবিরে থাকতে হচ্ছে। তার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল, "আমি কি চিরকাল এভাবে টাক থাকবে?" তার পক্ষে সেই স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাওয়া এখন কঠিন হয়ে উঠেছে, যেখানে প্রতিদিনের সংগ্রাম তার জীবনে এক নতুন ভয়ঙ্কর অধ্যায় নিয়ে আসছে।

এভাবে গাজার বাস্তবতায় অসংখ্য শিশু সামার মতো জীবনের প্রাথমিক চাহিদা থেকে মুখ ফিরিয়ে চলেছে। তাদের জন্য এই যন্ত্রণা কাটিয়ে উঠা এক কঠিন চ্যালেঞ্জ।

news