যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার আকাশে এখনও শান্তির চিহ্ন নেই। সাহ্‌রির সময় যখন গাজার বাসিন্দারা সেহরির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখনই বোমার বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে চারপাশ। মুহূর্তেই রক্তে ভেসে যায় রাস্তাঘাট, আহতদের চিৎকারে প্রকম্পিত হয় বাতাস। ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা নতুন করে বিভীষিকা ডেকে এনেছে ফিলিস্তিনিদের জীবনে।
যুদ্ধবিরতি ভেঙে ফের হত্যাযজ্ঞ

গত জানুয়ারিতে ঘোষিত যুদ্ধবিরতির পর কিছুটা স্বস্তি পেলেও, ফের ভয়ংকর হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। নেতানিয়াহুর সরকারের এ হামলায় গত মঙ্গলবার থেকে গাজায় ২০০ শিশুসহ অন্তত ৫০৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত ৯০৯ জন। বৃহস্পতিবারের মধ্যেই নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১১০। এ পর্যন্ত ইসরায়েলি আগ্রাসনে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৯ হাজারের বেশি মানুষ, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
ঘুমন্ত মানুষের ওপর বর্বর হামলা

তিনটি হাসপাতালের বরাতে সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, গভীর রাতে ইসরায়েলি বাহিনী ঘুমন্ত মানুষের ওপর হামলা চালিয়েছে। আবাসিক ভবনে নির্বিচারে বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে। ইসরায়েলের দাবি, হামাসের পরিকাঠামো ধ্বংসের জন্য এই অভিযান। তবে বাস্তবে অসংখ্য নিরীহ মানুষের মৃত্যু ঘটছে।
খাদ্য সংকটে গাজার মানুষ

গাজায় সবক’টি সীমান্ত বন্ধ রেখে বাণিজ্যিক পণ্য ও মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দিচ্ছে ইসরায়েল। ফলে ভয়াবহ খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে ২০০ শতাংশের বেশি।
ইসরায়েলের স্থল অভিযান ও প্রতিরোধ

ইসরায়েল সেনাবাহিনী মধ্য গাজায় ‘বাফার জোন’ দখলে নিয়েছে, যা ৮ কিলোমিটার পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় অসংখ্য আবাসিক ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, হামাসও পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলছে। ইতোমধ্যে তেল আবিব লক্ষ্য করে তিনটি রকেট ছুড়েছে তারা।
ইসরায়েলে ব্যাপক বিক্ষোভ

গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ ও জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে ইসরায়েলে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমেছে। জেরুজালেমে পার্লামেন্ট ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে ব্যাপক গণসমাগম হয়, যা সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ বলে মনে করা হচ্ছে।

গাজার আকাশে এখনও শোনা যাচ্ছে বোমার শব্দ, কেঁপে উঠছে ভূখণ্ড। রক্ত, কান্না আর ধ্বংসের মধ্যেও বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষ।

news