জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের নতুন সভাপতি হতে চলেছেন। জার্মান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে এই গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক পদে মনোনয়ন দিয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, এবার সভাপতির দায়িত্ব জার্মানির একজনের পাওয়ার কথা, আর সেই দায়িত্ব পাচ্ছেন বেয়ারবক।
আনালেনা বেয়ারবক কে?
৪৪ বছর বয়সি বেয়ারবক জার্মানির গ্রিন পার্টির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ। ২০২১ সালে চ্যান্সেলর প্রার্থী হয়েও নির্বাচনে জয়ী হতে না পারলেও, তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন। আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে তার ভূমিকা বরাবরই দৃঢ় ও স্পষ্টবাদী। মানবাধিকার ও মূল্যবোধভিত্তিক পররাষ্ট্রনীতির জন্য তিনি পরিচিত।
জাতিসংঘে তার ভূমিকা কী হবে?
নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে সাধারণ পরিষদের অধিবেশন পরিচালনা করবেন বেয়ারবক। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনার তত্ত্বাবধান করা এবং গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবেন। যদিও তার মেয়াদ মাত্র এক বছর, তবে এটি ভবিষ্যতে আরও বড় কূটনৈতিক দায়িত্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।
বিতর্ক ও চ্যালেঞ্জ
বেয়ারবকের এই নিয়োগ নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়েছে। জার্মান সরকার শুরুতে কূটনীতিক হেলগা শ্মিডকে মনোনীত করতে চেয়েছিল, যিনি ইরান চুক্তির মূল আলোচকদের একজন ছিলেন। তবে শেষ মুহূর্তে বেয়ারবককে বেছে নেওয়া হয়।
তার অতীত মন্তব্য নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। ২০২৩ সালে তিনি বলেছিলেন, "আমরা রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি", যা রাশিয়া পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরে। এছাড়া চীনের বৈশ্বিক উচ্চাভিলাষ নিয়ে তার সতর্কবার্তা জার্মানি-চীন সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি করেছিল।
রাজনৈতিক যাত্রা ও ভবিষ্যৎ
শৈশব থেকেই বেয়ারবক রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তার বাবা-মা পরিবেশবাদী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। হামবুর্গ ও লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসে পড়াশোনা শেষে তিনি দ্রুত জার্মান রাজনীতিতে নিজের অবস্থান তৈরি করেন।
জাতিসংঘে সভাপতির দায়িত্ব তার জন্য আন্তর্জাতিক কূটনীতির নতুন দুয়ার খুলবে। এখন দেখার বিষয়, তিনি কীভাবে এই দায়িত্ব সামলান এবং ভবিষ্যতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হন কি না!


