পবিত্র রমজানেও গাজায় থামেনি ইসরায়েলের ভয়াবহ আগ্রাসন। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে দখলদার বাহিনী একের পর এক হামলা চালিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করছে গোটা গাজা। এবার তাদের নিশানায় পড়ল গাজার একমাত্র ক্যান্সার হাসপাতাল, যা সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।

তুরস্কের সহায়তায় নির্মিত এই হাসপাতালটি গাজার কেন্দ্রীয় অঞ্চলে অবস্থিত ছিল এবং ক্যান্সার রোগীদের একমাত্র চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে কাজ করত। এই বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক।
তুরস্কের তীব্র প্রতিক্রিয়া

তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, তুর্কি-ফিলিস্তিনি মৈত্রী হাসপাতাল ধ্বংসের ঘটনায় ইসরায়েলের এই নৃশংসতার তীব্র নিন্দা জানায় আঙ্কারা। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গাজায় হাসপাতাল লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে ইসরায়েল তার অমানবিক ও নিষ্ঠুর চরিত্র প্রকাশ করেছে। তাদের লক্ষ্য গাজাকে সম্পূর্ণভাবে বসবাসের অনুপযোগী করে তোলা ও ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা।
গাজায় মানবিক বিপর্যয়

ইসরায়েলি হামলা আরও জোরদার হওয়ায় গাজার মানুষ আবারও ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছে। ইতোমধ্যে ইসরায়েলি বিমান থেকে লিফলেট ছড়িয়ে গাজার বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে বেইত লাহিয়া, বেইত হানুন, শিজাইয়া ও খান ইউনিস লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ৭২ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫০৬ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ২০০ জনের বেশি শিশু। আহতের সংখ্যা ৯০০ ছাড়িয়েছে।
ত্রাণ সংকটে মানবিক বিপর্যয়

ইসরায়েলের কঠোর অবরোধের ফলে খাবার, পানি, ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র সংকট চলছে গাজায়। ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ থাকায় লাখো মানুষ অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজাকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত কারাগারে পরিণত করেছে ইসরায়েল।

এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কী পদক্ষেপ নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। তবে স্পষ্টতই গাজায় পরিকল্পিত গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল।

news