গত কয়েক ঘণ্টায় শেয়ারবাজার এক দৌড়ে উপরে, তারপর আবার নিচে—এমন অস্থিরতা দেখা গেছে শুধু একটি খবরের জেরে! মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীন ছাড়া অন্য সব দেশের বিরুদ্ধে আরোপিত শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করার কথা ভাবছেন কি না, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই। তবে হোয়াইট হাউসের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কেভিন হ্যাসেট একটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ট্রাম্প এই পদক্ষেপ বিবেচনা করছেন।

এই খবর ছড়াতেই ওয়াল স্ট্রিটে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। শুরুতেই শেয়ারবাজার নিচের দিকে খুললেও, ৯০ দিনের শুল্ক স্থগিতের গুজব শুনে বিনিয়োগকারীরা দৌড়ে এসে শেয়ার কিনতে থাকেন। কিন্তু হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এখনও কোনো নিশ্চিত ঘোষণা না আসায়, আবারও বাজার নিম্নমুখী হয়েছে। ডাউ জোনস প্রায় ১% নিচে, আর ন্যাসড্যাক কিছুটা উপরে—এমন টানটান উত্তেজনা চলছে বাজারে।

ট্রাম্পের জেদ: "শুল্ক থেকে আমেরিকা কোটি কোটি ডলার কামাচ্ছে!"

এদিকে, ট্রাম্প তার শুল্ক নীতিতে একচুল নড়ছেন না। আজই ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্টে তিনি দাবি করেছেন, এই শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্র সপ্তাহে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় করছে এবং দেশে মুদ্রাস্ফীতি নেই বললেই চলে! এই মন্তব্য ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ারম্যানের সতর্কতার জবাব মনে করা হচ্ছে। গত শুক্রবার ফেড চেয়ারম্যান বলেছিলেন, শুল্ক বাড়লে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমবে।

বিনিয়োগকারীরা এই সতর্কতা মোটেও হালকাভাবে নেননি। ফেব্রুয়ারির শীর্ষ অবস্থানের তুলনায় এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ইতিমধ্যে ১৭% নিচে নেমে গেছে, আর আজও ২% পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমনকি ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের সমর্থক বিলিয়নিয়ার হেজ ফান্ড ম্যানেজার বিল অ্যাকম্যানও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, "ট্রাম্প যদি এখনই শুল্ক নীতি থেকে সরে না আসেন, আমেরিকাকে অর্থনৈতিক ধ্বংসস্তূপের মুখোমুখি হতে হবে!"

কিন্তু ট্রাম্পের অবস্থান স্পষ্ট—তিনি শুল্ককে "সুন্দর একটি জিনিস" বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং বলেছেন, "অন্যান্য দেশ যদি আমেরিকাকে প্রচুর টাকা না দেয়, তাহলে শুল্ক তুলব না!" তার বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারোও বলেছেন, "বিশ্বব্যাপী মন্দার ভয় করা অর্থহীন, আমরা বাণিজ্য সহযোগীদের সাথে আলোচনা করব।"

আজকের বড় টেস্ট: নেতানিয়াহুর সাথে ট্রাম্পের বৈঠক

এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে আজ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সাথে ট্রাম্পের বৈঠক হতে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বৈঠকেই ট্রাম্পের শুল্ক নীতির ভবিষ্যৎ কিছুটা স্পষ্ট হতে পারে।



ট্রাম্পের শুল্ক নীতি নিয়ে এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত কিছু নেই—গুজব, ইঙ্গিত, অস্বীকার আর বাজারের অস্থিরতায় ভরপুর এই খেলা। বিনিয়োগকারী থেকে সাধারণ মানুষ, সবাই এখন হোয়াইট হাউসের পরবর্তী ঘোষণার দিকে তাকিয়ে। 

#ট্রাম্প #শুল্ক #শেয়ারবাজার #অর্থনীতি #আন্তর্জাতিক

news