মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী লুভসান্নামস্রেইন ওয়ুন-এরদেন পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন, ছেলের বিলাসবহুল জীবনযাত্রা ঘিরে বিতর্ক ও দেশজুড়ে দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভের জেরে। মঙ্গলবার সংসদে অনুষ্ঠিত আস্থা ভোটে প্রয়োজনীয় সমর্থন না পাওয়ায় তিনি পদ হারান।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওয়ুন-এরদেনের ছেলের বিলাসী জীবনযাপনের ছবি ভাইরাল হয়। ছবিতে দেখা যায়, তার ছেলে ও হবু পুত্রবধূ বিদেশি ব্যান্ডের দামি ব্যাগ ও শপিং ব্যাগ হাতে বিদেশ সফরে ব্যস্ত। এই ছবি ঘিরেই জনরোষের সূত্রপাত হয়। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন—একজন সরকারি কর্মকর্তার পরিবারের পক্ষে এত বিলাসী জীবন কীভাবে সম্ভব?
এরই মধ্যে দেশটির দুর্নীতি দমন সংস্থা ওয়ুন-এরদেন পরিবারের আর্থিক লেনদেন তদন্তে নেমেছে। রাজধানী উলানবাটরে কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ চলার পর, গোপন ব্যালটে ৮২ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ৪৪ জন ওয়ুন-এরদেনের পক্ষে এবং ৩৮ জন বিপক্ষে ভোট দেন। তবে ১২৬ সদস্যের সংসদে প্রয়োজনীয় ৬৪ ভোট না পাওয়ায় তিনি পদত্যাগে বাধ্য হন।
আস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মহামারি, যুদ্ধ ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দেশের জনগণের সেবা করতে পেরে আমি সম্মানিত।’
মঙ্গোলিয়া দীর্ঘদিন ধরেই উচ্চপর্যায়ের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছে। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, কয়লা খনি থেকে অর্জিত লাভ অভিজাতদের পকেটে যাচ্ছে। ২০২১ সালে ক্ষমতায় আসার পর ওয়ুন-এরদেন দুর্নীতি প্রতিরোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির সূচকে দেশটি পিছিয়ে পড়ে।
গত সপ্তাহে শত শত তরুণ বিক্ষোভে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের আহ্বান জানায়। তাদের দাবি ছিল—'পদত্যাগ করা সহজ’। আয়োজক উলামসাইখান ওটগন বলেন, “তরুণরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার, সেটাই আমরা প্রমাণ করেছি।”


