ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিজের রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধ শুরু করছেন—এমন দাবি উঠে এসেছে ইসরাইলি বিশ্লেষকদের বক্তব্যে। তুরস্কের আনাদোলু এজেন্সি এবং ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থাগুলো একযোগে এই তথ্য প্রকাশ করেছে।

ইসরায়েলের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিউ গর্ডন বলেন, “নেতানিয়াহু বিশ্বাস করেন, ইতিহাসে নিজেকে বিজয়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ধ্বংস করাই একমাত্র পথ।” তাঁর মতে, নেতানিয়াহুর অহংকার এবং একজন ‘সফল নেতা’ হিসেবে নিজেকে দেখানোর ইচ্ছাই এই আগ্রাসনের মূল চালিকা শক্তি।

গর্ডন আরও বলেন, “৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর নেতানিয়াহুর ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তিনি কঠোর সামরিক অভিযানে ঝাঁপিয়ে পড়েন।” বিশ্লেষক উরি গোল্ডবার্গ যোগ করেন, “নেতানিয়াহু ইচ্ছাকৃতভাবে এমন বার্তা ছড়াতে চান যে, ইসরায়েল অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে, যাতে তিনি কঠোর পদক্ষেপকে ন্যায়সঙ্গত দেখাতে পারেন।”

এদিকে ইসরায়েলি সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, তারা ‘পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি’ দূর করেছে, যা যুদ্ধবিরতির পক্ষে একটি কৌশলগত অবস্থান হতে পারে। তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, এই ঘোষণা বাস্তবের চেয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বেশি।

আনাদোলুর বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু সাম্প্রতিক অনাস্থা ভোটে অল্পের জন্য বেঁচে যাওয়ার পরপরই ইরানের ওপর হামলা চালান, যা আবার সংসদ ভেঙে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল। বিশ্লেষকদের মতে, যুদ্ধ এখন নেতানিয়াহুর টিকে থাকার কৌশলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গাজা ও লেবাননে আগ্রাসন, দুর্নীতির অভিযোগ এবং ভঙ্গুর জোটের মধ্যেই নেতানিয়াহুর ভবিষ্যৎ রাজনীতি যুদ্ধেই নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত।

news