আজ সোমবার (৬ জুন) এক লিখিত বিবৃতিতে বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলন কেন্দ্রীয় পাঠচক্র ফোরামের সমন্বয়ক কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ফলে শ্রমজীবী সাধারন মানুষের জীবন যাপন এমনিতেই দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে, সেসময় গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা শুধু অমানবিক নয় এটা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।
তিনি বলেন, গত ৫ জুন যখন সীতাকুন্ডে ভয়াবহ বিস্ফোরণে শত শত মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করছে এবং সারাদেশের মানুষ এই বিভৎস ঘটনায় শোকাহত ও বিক্ষুব্ধ , তখন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন ভোক্তা পর্যায়ে গ্যাসের দাম গড়ে ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ বাড়ানো ঘোষণা দিয়েছে। এটা গণবিরোধী সরকারের চরম অমানবিক আচরণের বহিঃপ্রকাশ।
তিনি বলেন, গত দশ বছরে ৪ দফায় গ্যাসের দাম ৩৬১ শতাংশ বৃদ্ধির ফলে মানুষের জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়ছে। আর গত দুই বছর ধরে বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রভাবে অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষ। এই অবস্থায় আবার গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি মরার উপর খাঁড়ার ঘা। এর ফলে মানুষের জীবন আরো দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বর্তমানে প্রতিদিন তিন হাজার ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস বাংলাদেশে সরবরাহ করে বিতরণ কোম্পানিগুলো। তার মধ্যে ২ হাজার ৩০০ ঘনফুট গ্যাস দেশীয় উৎস থেকে সরবরাহ করা হয়। বাকি ৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি গ্যাস আমদানী করা হয়। তার মধ্যে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস কেনা হয় ১০ বছরের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে ৬ থেকে ১০ ডলার মূল্যে। স্পট মার্কেট থেকে বাকি ১০০ থেকে ১৫০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি গ্যাস কেনা হয়, যেটির দাম ওঠানামা করে। ফলে এই স্বল্প পরিমাণ গ্যাসের জন্য এই মূল্যবৃদ্ধি অযৌক্তিক।
তিনি বলেন, সরকারের ভুল নীতি, অব্যবস্থাপনা, সিস্টেম লস ও দুর্নীতি দূর করার কার্যকর উদ্যোগ না নিয়ে গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া জনবিরোধী। তিনি সরকারকে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানান এবং সরকারের এই গণবিরোধী অবস্থানের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের জনসাধারনকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।