২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে ব্যবসায়ী বান্ধব ও গণবিরোধী বাজেট বলে আখ্যায়িত করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। আজ ১০ জুন ২০২২ তারিখ সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য এক যুক্ত বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ ও সাধারণ সম্পাদক শোভন রহমান বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে, তবে প্রয়োজনের তুলনায় তা অতি নগন্য। গত অর্থবছরে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ ছিল মোট বাজেটের ১১.৬৯%, এবছর তা হয়েছে ১২.০১% এ। বিগত কয়েক দশক ধরেই ১২% এর কাছাকাছিই ছিল এই বরাদ্দ, তাই এই বছরের বাজেটেও শিক্ষাখাত রয়েছে গতানুগতিক ধারায়। করোনা পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার নানা গালগল্প শোনালেও এই বাজেটে কোন মৌলিক বা দৃষ্টিভঙ্গিগত পরিবর্তনই লক্ষিত হয়নি। 

বাজেট প্রস্তাবনার আগে শিক্ষামন্ত্রী তার বক্তব্যে ইউনেস্কো’র সুপারিশ অনুযায়ী শিক্ষাখাতে জিডিপি’র ৬ ভাগে বরাদ্দের আকাঙ্খা ব্যক্ত করলেও তার বক্তব্যের ঠিক ২ ঘন্টা পরে যে বাজেট প্রস্তাবিত হয়, তাতে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ জিডিপি’র মাত্র ১.৮৩ ভাগ। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রট মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য শিক্ষাখাতে বাজেটের ২৫% ও জাতীয় আয়ের ৮ ভাগ বরাদ্দের দাবিতে বহুদিন ধরে আন্দোলন করলেও সেই দাবি বরাবরের মতই উপেক্ষিত রয়ে গিয়েছে। একদিকে করোনাকালের শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য ব্লেন্ডেড লার্নিং সিস্টেমের কথা বলা হচ্ছে, তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তির দক্ষতা বৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে, অন্যদিকে বাজেটে অপটিক্যাল ফাইবারের উপর অতিরিক্ত ১০% শুল্ক আরোপ করে ও ল্যাপটপ আমদানিতে ভ্যাট বসিয়ে ইন্টারনেট ও ডিভাইস কেনার খরচ বৃদ্ধির প্রস্তাবনা এসেছে, যা পরষ্পর সাংঘর্ষিক।

প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের উপর ১৫% ভ্যাট অব্যাহত রাখার তীব্র নিন্দা জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় বিদ্যমান বৈষম্যকে বৃদ্ধি করে শুধুমাত্র ধনিক শ্রেণির হাতেই শিক্ষাকে কুক্ষিগত করার দৃষ্টিভঙ্গিই প্রকাশ পায় এই পদক্ষেপ থেকে।

প্রস্তাবিত বাজেটকে গণবিরোধী উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, গতানুগতিক এই বাজেট ছাত্র সমাজ প্রত্যাখ্যান করেছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি সহ জনকল্যানমূলক কোন খাতেই বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ মেলেনি। অথচ এই মুহূর্তে তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ বড় বড় মেগাপ্রোজেক্ট এই বাজেটের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার নামে টাকা পাচারকে বৈধতা দেওয়ার মত অনৈতিক প্রস্তাবও এসেছে এই বাজেটে। সর্বপরি আড়ম্বরের এই বাজেটে ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক, নিম্ন আয়ের জনগণের জন্য কোন স্বস্তির নিঃশ্বাস মিলবে না।

নেতৃবৃন্দ সকলকে এই বাজেট প্রত্যাখ্যান করে জনগণের বাজেট প্রণয়নের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

news