দেশের মানুষ এখন রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন দেখতে চায়। ক্ষমতায় যাওয়া মানে দুর্নী তি করে টাকা বানানো। দাবি আদায়ে ব্যবহার করা হতো হরতাল-ধর্মঘট। এবের পরিবর্তন চায় তরুণ সমাজ। রাজনীতিতে সহিষ্ণুতা ও শিষ্টাচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ব্যবসায়ীরা রাজনীতি অর্থলগ্নি করে কড়ায়-গন্ডায় তার ফায়দা তুলে নিচ্ছেন। সাধারণ মানুষ এ ধরনের রাজনীতি থেকে মুক্তি চায়। তবে শেখ হাসিনার পতনের পর রাজনীতিবিদদের মধ্যে কিছুটা পরিবর্তন আসছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে দেশ অনেকদূর এগিয়ে যাবে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ক্ষমতার পরিবর্তন মানে শুধুই রাষ্ট্র ক্ষমতার হাত বদল নয়। ক্ষমতার পরিবর্তন মানে রাষ্ট্র এবং রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন হতে হবে। জনগণের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা না গেলে রাষ্ট্র এবং রাজনীতির কাঙ্খিত গুণগত পরিবর্তন সম্ভব নয়। কাঙ্খিত রাষ্ট্র সংস্কারে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে গণতান্ত্রিক বিধি ব্যবস্থাকে টেকসই করতে হলে জনগণের ভোটে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, গণহত্যাকারী হাসিনার পলায়নের মধ্য দিয়ে ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসানের পথ উন্মুক্ত হয়েছে। তাই, দেশে জবাবদিহিমূলক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার এখনই সময়। লাঞ্ছিত বঞ্চিত অধিকারহারা মানুষ একটি স্বাধীন, নিরাপদ এবং মর্যাদাকর জীবনের প্রত্যাশায় উন্মুখ হয়ে রয়েছেন। জনপ্রত্যাশা পূরণের জন্য একটি নিরাপদ এবং মানবিক বাংলাদেশ গড়ার এখনই সময়। ২০ আগস্ট লন্ডন থেকে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, একটা বিশাল পরিবর্তনের সুযোগ এসেছে। আমাদের জাতীয় জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তনের নমুনা দেখা যাচ্ছে। সেখানে আমরা রাজনীতি কী করছি, অতীতে কী করেছি এবং ভবিষ্যতে কী করব তার একটা ধারণা থাকা দরকার।

তিনি বলেন, কতিপয় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের পথেই হাঁটছে। যা পরিবর্তনের জন্য মোটেই সুখকর নয়। জনগণ এটাকে ভালোভাবে নিচ্ছে না। 
১২ সেপ্টেম্বর বনানী কার্যালয়ে জাতীয় কৃষক পার্টির সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেছেন, রাজনীতি হচ্ছে সহনশীলতা, সহমর্মিতা ও আপসকামিতার নাম। আমাদেরকে সর্বপ্রথম রাজনীতির সংস্কার করতে হবে। প্রশাসনের সংস্কার করতে হবে। তাদের (প্রশাসনের) ভাষা শুনলে রাজনৈতিক নেতাদের মতো মনে হয়। এটি রাষ্ট্রের কারণে হয়েছে।  সে কারণে প্রশাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। ১৬ আগস্ট ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে মতবিনিময় সভার তিনি এসব কথা বলেন।

মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘ছাত্র ও জনতার আন্দোলনের সঙ্গে শেষ দিকে রাজনৈতিক দল যুক্ত হয়ে এই পরিবর্তন হয়েছে। এ ক্রেডিট ছাত্র-জনতার। জনতার সঙ্গে আমরাও আছি, সব রাজনৈতিক দল আছে।  এজন্য বিজয়ের পর জামায়াতে ইসলামী কোনো আনন্দ মিছিল করেনি। আমরা কোথাও মিছিল সমাবেশ করতে দেয়নি। কারণ ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে আমরা প্রশ্নবিদ্ধ হতে দিতে চাইনি। জামায়েত ইসলাম চাইলে পরদিনই ১০ লাখ লোকের সমাবেশ করতে পারতো, কিন্তু আমরা তা করিনি।’

আগামীতে নতুন বাংলাদেশ রচিত হবে। নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে নতুন রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হবে। সেই অঙ্গীকার নিয়েই গণঅধিকার পরিষদের রাজনৈতিক পথচলা বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।

তিনি বলেছেন, পুরোনো রাজনৈতিক দলে শাসন ব্যবস্থা ও কর্মপদ্ধতি দেশের মানুষ দেখেছে। যেই লাউ, সেই কদু। শত শত মানুষ ছাত্র আন্দোলনে জীবন দিয়েছে, আর যেন কাউকে জীবন দিতে না হয়, এজন্য টেকসই গণতন্ত্র চায় গণঅধিকার পরিষদ। ৭ সেপ্টেম্বর মাদারীপুর জেলার শিবচরের পাঁচ্চরে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।

news