দলের একাংশের আপত্তির মুখে ব্রাহ্মণাড়িয়া-২ আসন থেকেই নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির আন্তর্জাতিক-বিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানা। তিনি বলেছেন, ‘আমি যদি এক বাপের বাচ্চা হয়ে থাকি, সরাইল-আশুগঞ্জ (ব্রাহ্মণাড়িয়া-২ আসন) থেকেই নির্বাচন করব। আমি বৃদ্ধ মাকে ঢাকার মাটিতে আল্লাহর জিম্মায় রেখে প্রতি সপ্তাতে দুই তিন দিন এই মাটিতে পড়ে থাকি তামাশা করার জন্য না। আমাকে বহিরাগত বলো। আমার বাবা এখান থেকে নির্বাচন করেছেন। আমি এখান থেকেই নির্বাচন করব।’

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা সদরের স্থানীয় পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে কর্মিসভায় রুমিন ফরহানা এসব কথা বলেন।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল মান্নান ও সদস্যসচিব সিরাজুল ইসলামের স্বাক্ষরিত একটি পত্রে সরাইলে ১০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হওয়ার ঘোষণা দেন। কিন্তু এতে পূর্ণাঙ্গ কমিটির নামে শুধু সভাপতি আনিছুল ইসলাম ঠাকুর ও সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লস্করের নাম প্রকাশ করা হয়। বাকি ৯৯ জনের নাম এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

এ সম্পর্কে কর্মিসভায় রুমিন ফরহানা বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাটি খালেদা জিয়ার ঘাঁটি, তারেক জিয়ার ঘাঁটি। বিএনপির এই ঘাঁটিতে ১০১ জনের কমিটি ঘোষণা দিয়ে ২ জনের বাইরে কারও নাম প্রকাশ করা যায় না। আমরা ৯৯ জনের নাম জানি না। আজ আমাকে বলা হচ্ছে, আমি নাকি থাকব না।’

নিজ অনুসারীদের উদ্দেশ্যে রুমিন ফরহানা বলেন, ‘আমার হাতকে শক্তিশালী করুন। আমার হাতকে শক্তিশালী করা মানে খালেদা জিয়ার হাতকে শক্তিশালী করা, তারেক জিয়ার হাতকে শক্তিশালী করা, বিএনপির হাতকে শক্তিশালী করা।’

নুরুজ্জামান লস্করকে উদ্দেশ্য করে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘তোমার (নুরুজ্জামান) বিরুদ্ধে কয়টা মামলা হয়েছে। আমি একা আওয়ামী লীগের ৩০০ এমপির বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। রাজ পথে রক্ত দিয়েছি। ১০১ জনের নাম প্রকাশ করতে পারো নাই। এখন তুমি নির্বাচন করবা। আরে আমার ঘরের কাজের লোক এবং আমার ড্রাইভারও নির্বাচন করতে চায়। আমি বলি, গণতন্ত্রের দেশ, নির্বাচন কর।’

সরাইল বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মিসভায় আরও বক্তব্য দেন উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার, সরাইল সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি স্বপন মিয়া, সম্পাদক ইউসুফ মিয়া প্রমুখ।

রুমিন ফারহানা সামনে ব্রাহ্মণাড়িয়া-২ আসন (সরাইল-আশুগঞ্জ) থেকে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি সভা-সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছেন। ৫ আগস্টের পর সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন তিনি সরাইল ও আশুগঞ্জে অবস্থান করছেন।

রুমিন ফারহানা বিজয়নগর উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। বর্তমানে তিনি সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের বাসিন্দা। গত সরকারের আমলে গঠিত বিজয়নগর উপজেলাটি একসময় ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার অধীন। তখন এলাকাটি ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-সদরের একাংশ) আসনের অন্তর্গত। বতর্মানে পুরো বিজয়নগর উপজেলাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের অন্তর্ভুক্ত।

১৯৭৩ সালের নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে রুমিন ফারহানার বাবা অলি আহাদ নৌকার প্রার্থী তাহের উদ্দিন ঠাকুরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তখন তাহের উদ্দিন ঠাকুর নির্বাচিত হয়েছিলেন। 

news