অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ঘোষণার পর রাজনীতিবিদরা গণমাধ্যমে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন। কেউ বলেছেন জনগণই ঠিক করবে নির্বাচনের সময়। কেউ স্বগত জানিয়েছেন। স্বাগত জানালেও সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চেয়েছে বিএনপি ।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, যদি অল্প কিছু সংস্কার করে ভোটার তালিকা নির্ভুলভাবে তৈরি করার ভিত্তিতে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হয় তাহলে ২০২৫ সালের শেষের দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠান হয়তো সম্ভব হবে। আর যদি এর সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এবং জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রত্যাশিত মাত্রার সংস্কার যোগ করি তাহলে আরও অন্তত ছয় মাস অতিরিক্ত সময় লাগতে পারে। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সকাল ১০টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
ভোট নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্যে সাদুবাদ জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেছেন, নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করতে রাজি আছি। সংস্কার হবে, তবে যুগ যুগ ধরে অপেক্ষা করতে রাজি নই। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ এসব কিছুর জন্য রাজনৈতিক সরকার দরকার। নির্বাচনের রোডম্যাপ দরকার। আশাকরি অন্তর্বর্তী সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে জনগণের হাতে ক্ষমতা দেবে।
স্থায়ী কমিটির সদস্যআমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, মানুষ আজ নতুন বাংলাদেশে, স্বাধীন বাংলাদেশে পদার্পণ করেছে। বিগত ১৫ বছরে বহু রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আজকের নতুন বাংলাদেশ। আগামীর বাংলাদেশে যাতে কোন স্বৈরাচার জায়গা করতে না পারে। আর কোনো গোষ্ঠি বা ব্যক্তি যাতে বাংলাদেশকে দখল করতে না পারে। জনগণের সরকার হতে হবে। নির্বাচিত সরকার হতে হবে।‘
সরকার আন্তরিক হলে আরও আগেই নির্বাচন দেওয়া সম্ভব, তবে নির্বাচনের সময় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সংস্কার যুগ যুগ ধরে চলবে। সময়ের চাহিদায় সংস্কার করতে হবে। নির্বাচনের সময় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য ইতিবাচক। তবে সরকার আন্তরিক হলে আরও আগেই নির্বাচন দেওয়া সম্ভব।
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নিয়ে একটা ধারণা দিয়েছেন। কিন্তু তাতে সুস্পষ্ট কোনো রোডম্যাপ নেই। প্রয়োজনীয় কোন কোন ক্ষেত্রে সংস্কার করা হবে, সে জন্য কতটা সময় প্রয়োজন, তা প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে স্পষ্ট নয়। আমরা আশা করি, তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) সংস্কারের সময় ও নির্বাচনের সময় সুনির্দিষ্ট করে একটি রোডম্যাপ দেবেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন প্রসঙ্গে যেটাই বলুন, এদেশে নির্বাচন কবে হবে সেটার সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ। আর আজকে আমাদের শপথ নেওয়ার দিন। জনগণ তার অধিকার ফেরত চায়। জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ছেড়ে দিলে সমস্যার সমাধান হবে। যত দ্রুত গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে আসবে ততই স্বস্তি আসবে দেশে।