আওয়ামী লীগের ‘দোসর’ এখনো সরকারি চাকরিতে আছে মন্তব্য করে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, “সরকারের চার মাসের প্রশাসনিক কার্যক্রম সন্তোষজনক নয়।”

রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় সংসদ (ডাকসু) ভবনের সামনে এক আলোচনাসভায় তিনি বলেন, “নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে গত ১৬ বছর যাদের চাকরি দেওয়া হয়েছে, তাদেরকে বহিষ্কার করা হোক।“

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে আলোচনায় তিনি বলেন, “সাধারণ আওয়ামী লীগ যারা, আমরা তাদের ক্ষমা করে দেওয়ার পক্ষে। কিন্তু যারা ছাত্রদল ও শিবিরের ছেলেদের রক্তাক্ত করেছে, তাদের নির্মূল করতে হবে।”

আর কোনো ছাত্রলীগ বা সন্ত্রাসের জন্ম যেন না হয়, সে কথাও বলেন তিনি।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ডাকসুর তৎকালীন ভিপি নুরুল হক নুর ও ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিচার দাবিতে ছাত্র অধিকার পরিষদ এই সভা আয়োজন করে।

নুর বলেন, "ভারতে এনআরসি ও সিএএ বিল পাসের মাধ্যমে মুসলমানদের নাগরিকত্ব বাদ দেওয়া হবে, কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে রাখা হবে, তারপর বাংলাদেশে পাঠানো হবে— এরকম একটা প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছিল।

“আমরা সিএএ ও এনআরসির প্রতিবাদে একটি বিবৃতি দিয়েছিলাম। এ বিষয়ে সাদ্দাম হোসেন (ছাত্রলীগ সভাপতি) আমাকে বলেছিল, দেশের অন্য ইস্যু নিয়ে কথা বলতে। আমরা যদি ভারত নিয়ে কোন কথা বলি তাহলে ছাত্রলীগ ঝামেলা করবে। সেটাকে কেন্দ্র করেই মূলত আমাদের ওপর হামলা করা হয়।"

তিনি বলেন, “কোনো ছাত্রলীগ বা সন্ত্রাসের জন্ম আর যেন না হয়, সেজন্য ডাকসু নির্বাচন দরকার। কিন্তু একটি দল দেখছি সুবিধা করতে পারবে না ভেবে নির্বাচন চাচ্ছে না।”

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেন, “হামলার কথা জানানোর পর তৎকালীন প্রক্টর গোলাম রাব্বানী বলেন, বন্ধের দিনে ক্যাম্পাসে এসেছেন কেন? সেটা বলে তিনি হামলাকে বৈধতা দেন। আমরা তার মত শিক্ষকের বহিষ্কার চাই।”

তার ভাষ্য, “সাদ্দাম ও সঞ্জিতকে আসামি করে শাহবাগ থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ তা নেয়নি। পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছিল; প্রতিবেদনে বলেছিল ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। আমরা সেই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করছি।”

আলোচনাসভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, “বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের মতভেদ থাকতে পারে। তবে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও শিক্ষার পরিবেশের বিষয়ে আমাদের এক থাকতে হবে।”

তিনি বলেন, “হামলার বিষয়ে শাহবাগ থানার ওসির সঙ্গে কথা বলেছি। মামলার নথি পেলে পুনরায় চালু করার কথা বলেছি।”

আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুশাদ ফরিদী উপস্থিত ছিলেন।

news