নির্বাচনের জন্য ১৭ বছর ধৈর্য ধরেছি, প্রয়োজনে আরও কয়েকটা দিন ধৈর্য ধরতে পারবো বলে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের জন্য সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে হবে। নির্বাচন সংস্কার কমিটি হয়েছে। তারা কাজ করছেন। নির্বাচনের জন্য আমরা অনেক ধৈর্য ধরেছি। আরও কয়েকটা দিন ধৈর্য ধরতে পারবো।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে গাইবান্ধা ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। জামায়াতে ইসলামী গাইবান্ধা জেলা শাখা এই সম্মেলনের আয়োজন করে। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা জামায়াতের আমির মো. আবদুল করিম। 

শফিকুর রহমান বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন— আগামী বছরের শেষের দিকে জাতীয় নির্বাচন করা সম্ভব হতে পারে। নির্বাচনের কাজ করতে সংস্কার কমিটির আরও একবছর সময় লাগবে। এ সংস্কার কাজে জামায়াত সহযোগিতা করবে।

নির্বাচনে জামায়াত কতটি আসনে প্রার্থী দেবে, তা সংস্কার কাজ শেষ হলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। 

দলটির আমির বলেন, জামায়াত ইসলাম ক্ষমতায় গেলে কর্মক্ষেত্রে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। গত ৫ আগস্ট পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধানমন্ত্রী ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে যে তিনটি ডামি নির্বাচন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে, জনগণ তা প্রত্যাখ্যান করেছে। নির্বাচনের আগে রাতে ভোট মেরে নিয়ে, দিনের বেলা তারা তাণ্ডব চালিয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, তৎকালীন সরকারের আমলে শাপলা চত্বরে রক্তের বন্যা বয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনা এজন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু সেই তদন্ত আলোর মুখ দেখেনি। সে বিচার আজও হয়নি। এই ঘটনায় নাটক সাজিয়ে তার দায়ভার বিরোধীদলের উপর দেওয়া হয়েছে। স্বাধীনতার পর জামায়াতের কোনো নেতাকর্মী কোনো নির্যাতন ও সম্পত্তি দখল করেনি। যদি এমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে সেই নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

জনগণের উদ্দেশ্যে আমির বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টানদের উপর কারা কারা অত্যাচার করেছেন, তাদের সম্পত্তি কারা দখল করেছেন। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে সে বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে তদন্ত করে শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে। যারা দোষী তাদের বিচার করা হবে। আয়না ঘরে আমি ছিলাম। পাশে ওই ঘরে কি পরিমাণ অত্যাচার নির্যাতন হয়েছে। তা আমরা দেখেছি। তাদের নির্মম নির্যাতনে লোকজন স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন।

শফিকুর রহমান বলেন, দখলবাজ চাঁদাবাজমুক্ত দেশ গড়তে নেতাকর্মীদের ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। সব ক্ষেত্রে বৈষম্যহীন একটা দেশ গড়তে চাই। যে দেশে দখলবাজ চাঁদাবাজি চলবে না। 

এদিকে কর্মী সম্মেলন সফল করতে গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড নিয়ে সমাবেশে যোগ দেয়। সকাল ১০টার মধ্যে ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জড়ো হয়। সম্মেলন মাঠে লক্ষাধিক লোকের সমাগম হয়।

দীর্ঘ ২২ বছর পর এই মাঠে প্রকাশ্যে কর্মী সম্মেলন করছে জামায়াত। ২০০২ সালের পর এই মাঠে আর প্রকাশ্য সমাবেশ করতে পারেনি জামায়াত।

news