ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পতন ঘটে আওয়ামী লীগের টানা ১৬ বছরের শাসনামলের। ওই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে প্রতিবেশী দেশ ভারতে পালিয়ে যান। খবরটি ছড়িয়ে পড়তেই দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা আত্মগোপনে চলে যান। আওয়ামী লীগ সরকার ও তার শীর্ষ নেতৃত্ব আপাতত দৃশ্যপট থেকে সরে গেলেও তাদের ঘনিষ্ঠ আমলারা বিভিন্ন অন্তর্ঘাতমূলক কৌশলের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারকে চাপে ফেলতে সক্রিয় রয়েছে।  

সম্প্রতি সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ষষ্ঠ থেকে নবম তলা পর্যন্ত ধ্বংস হয়ে যায়। এ ঘটনায় সন্দেহের তীর ঘুরছে আওয়ামী লীগ আমলের সুবিধাভোগী আমলাদের দিকে। যদিও অন্তর্বর্তী সরকার কিছু আমলাকে অবসরে পাঠিয়েছে, তবে অধিকাংশই স্বপদে বহাল রয়েছেন। তারা এখনো সরকারে প্রভাব খাটাচ্ছেন এবং পেছন থেকে আওয়ামী লীগের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছেন।  

গত কয়েক মাসে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আন্দোলন ও অসন্তোষ দেখা গেছে। গ্রাম-পুলিশ, আনসার, শিক্ষক, পোশাকশ্রমিক, এবং ইসকন ইস্যুতে বিভিন্ন আন্দোলনের পেছনে আওয়ামী লীগের ভূমিকা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আন্দোলনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল করার কৌশল নিয়েছে তারা।  

৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরে আসতে চেয়েছিল বলে জুডিশিয়াল ক্যু’র অভিযোগ উঠেছে। পরে ১৫ আগস্ট সারা দেশ থেকে নেতাকর্মীদের ঢাকায় জড়ো করে প্রতিবিপ্লবের পরিকল্পনাও করে। এসবের নেপথ্যে ছিল শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের ভারত থেকে পরিচালিত নির্দেশনা।  

এ ছাড়া বিভিন্ন গোষ্ঠীকে সংঘাতে উসকে দেওয়া, শিক্ষাঙ্গনে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি, এবং গণপিটুনির ঘটনাগুলোকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার মতো কৌশল নিয়েছে দলটি। ছাত্র-জনতার প্রতিরোধের মুখে এসব পরিকল্পনা আপাতত ব্যর্থ হলেও, আওয়ামী লীগ আমলের সুবিধাভোগী আমলাদের মাধ্যমে অন্তর্ঘাতের ছক বাস্তবায়নের আশঙ্কা এখনো থেকে যাচ্ছে।  

news