আজ ১৬ জানুয়ারি সকাল ১১টায় সেগুনবাগিচার গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের অস্থায়ী কার্যলয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে একটি জরুরী সভা। সভার সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক কমরেড ডাঃ সামছুল আলম। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল)’র সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড হারুন চৌধুরী, সোস্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এসডিপি)’র আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ, এবং প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি)'র মহাসচিব হারুন আল রশিদ খান।
সভায় বক্তারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে একটি দীর্ঘ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের ফল হিসেবে উল্লেখ করেন। ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত এ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান এবং জনমনে স্বস্তি ফিরে আসে। আন্দোলনে দুই সহস্রাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে, এবং আরো হাজার হাজার মানুষ অঙ্গহীন হয়ে চিরকাল পঙ্গু হয়ে যায়। কিন্তু তার পরেও দেশের মানুষ নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের অপেক্ষায় রয়েছে।
গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের নেতারা জানান, ৭ আগস্ট ড. ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যাত্রা শুরু করলেও, উগ্র মৌলবাদী অপশক্তির উত্থানসহ নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তবে বিএনপি সহ ৬১টি রাজনৈতিক দল এই সরকারকে সহযোগিতা করে আসছে। তবে, দলের নেতারা শঙ্কা প্রকাশ করেন যে, কিছু গোষ্ঠী গণঅভ্যুত্থানকে অপব্যবহার করে তাদের নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাইছে।
এ সময় তারা আরো বলেন, ‘মুজিববাদের কবর রচনার’ নামে সংবিধানকে উপেক্ষা করা, মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা, মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা এবং শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টা চলছে। বেনামে গুটিকয়েক লোক মিলে অশান্তি সৃষ্টি করে চলেছে, যা এখনো প্রতিকারহীন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও তাদের পক্ষ থেকে পক্ষপাতিত্বমূলক রাজনৈতিক দল গঠনের চেষ্টা করছে, যা দেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। নেতারা সংবিধান সংস্কারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে একমত না হওয়ার কারণেও সরকারের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন।
এছাড়া, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য জানায় যে, তারা জুলাই গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কিত ঘোষণাপত্র প্রকাশের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণ গ্রহণে অপারগ। তারা মনে করে, সর্বদলীয় সভা আহ্বান করতে তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি এবং তাদের মনে হয় এই বিষয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা প্রয়োজন ছিল।
গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য আরো জানায়, তারা মনে করে যে, রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফার আলোকে সব কিছু পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের হাতে দেওয়া হবে। তাদের দাবি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এখন একমাত্র করণীয় হল নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা।
গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য বলেছে, দেশের পরিস্থিতি প্রতিদিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। জনগণ এখন স্বস্তির জায়গায় শঙ্কিত। রাজনৈতিক দলগুলো ভবিষ্যতের করণীয় নিয়ে আলোচনা করবে এবং সিদ্ধান্ত নিবে।
যুগপৎ আন্দোলন এবং বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য।


