ইসলামে কুকুরের মর্যাদা
হয়তো ভাবছেন এই রোজা রমজানের দিনে এতো কিছু থাকতে কেন কুকুর নিয়ে লিখছি। যাকাত নিয়ে লিখতে বলেছিল এক বন্ধু। ভাবলাম যেই মাত্র লিখবো, সারা বছর যাকাত না দিয়ে শুধুমাত্র রমজান মাসে ২.৫% যাকাত দেওয়ার এই প্রথা কোরআনের নীতিমালার সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ - সঙ্গে সঙ্গেই অনেকের ব্রম্মতালু গরম হয়ে যাবে। তা আমি কোরআনের আয়াত এনে দেখালেও কোনো লাভ হবে না।
তার থেকে বরং কুকুর নিয়ে লিখি। কারণ অন্য একজন বন্ধু দুঃখ করে মেসেজ পাঠিয়েছে যে, কে বা কারা রাতের আঁধারে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় তার প্রতিষ্ঠিত পথকুকুরের হোটেল ভেঙ্গে দিয়েছে। তিনি এই হোটেল করেছিলেন পথকুকুরদের জন্য। কারা ভেঙ্গেছে সেটা অনুসন্ধান করা আমার কাজ নয়।
তবে কুকুর সম্পর্কে আমাদের কিছু বিশ্বাসের কথা বলি। ছোটবেলায় দেখেছি গ্রামের অনেক বাড়িতে পোষা কুকুর থাকতো। তাদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা থাকতো। রাতে বাড়ি পাহারা দেওয়াই ছিল তাদের কাজ। আমাদের বাড়িতেও পোষা কুকুর ছিলো। এখন যদিও মুসলমান বাড়িতে আর কুকুর পোষা হয় না। মুসলমানদের অনেকেই বিশ্বাস করে যে, যে বাড়িতে কুকুর থাকে, সে বাড়িতে ফেরেস্তা প্রবেশ করে না। যদিও এই বিশ্বাসটি কোরআন এর সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ, আমি কোরআনের আয়াত দিয়ে যুক্তি দিলেও কোনো লাভ নেই। তবুও দেই।
অনেকেই বৃহস্পতিবার রাত আসলেই সুরা কাহাফ্ পড়ার ব্যপারে অতি আগ্রহী। অনেকেই অর্থ না বুঝে কোরআন পড়েন। যাইহোক, এই সুরার ১৮ নম্বর আয়াতে (১৮:১৮) আল্লাহ রাব্বুল আলামিন গুহাবাসীদের যে উদাহরণটি দিয়েছেন, সেখানে বলছেন, তাদের সঙ্গে ছিল তাদের কুকুর। কুকুরটি গুহার প্রবেশ দ্বারে শুয়ে থেকেছে। আর ফেরেস্তারা বিভিন্ন সময়ে তাদেরকে ঘুমন্ত অবস্থায় পাশ ফিরিয়ে দিয়েছে। এই আয়াতে ডাক্তারি বিদ্যার একটি শিক্ষা যেমন রয়েছে (অসুস্থ রোগীকে এক পাশে বেশিদিন শুইয়ে রাখা যাবে না, পাশ পরিবর্তন করে দিতে হবে); তেমনি রয়েছে কুকুর থাকলেও ফেরেস্তা আসতে কোনো অসুবিধা নেই।
সুরা মায়েদ্বার ৪ নং আয়াতেও (৫:৪) বলা হচ্ছে, শিকারী কুকুররা (ঃৎধরহবফ ফড়মং) যা আমাদের জন্য শিকার করবে, তা খাওয়া হালাল। সুতরাং কুকুর সম্পর্কে মুসলমানদের অনেকের বিশ্বাস কোরআনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
যাইহোক, যার বিশ্বাস তার কাছে। তবে সঠিক সত্যকে জানতে হলে, আসুন অর্থ বুঝে কোরআন পড়ি, কোরআনের আলোয় জীবন গড়ি।
ভালো লাগলে সঙ্গে থাকুন।
এনবিএস/ওডে/সি


