তথ্য কমিশন বাংলাদেশ এবং কার্টার সেন্টারের (The Carter Centre) যৌথ উদ্যোগে “অনগ্রসর, প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত নাগরিকের তথ্য অধিকার” বিষয়ে এক কর্মশালা মঙ্গলবার (২৮ মে) সকাল ১০টায় তথ্য কমিশন বাংলাদেশ এর সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে কর্মশালার শুভ উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন তথ্য কমিশন বাংলাদেশ এর প্রধান তথ্য কমিশনার ডক্টর আবদুল মালেক। 

কর্মশালায় তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, তথ্য অধিকার হচ্ছে মানবাধিকার, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত বাংলাদেশে সবার তথ্য পাওয়া নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তৃণমূলে তথ্য পৌঁছে দিতে সরকার কাজ করছেন। সরকারি পর্যায়ে যারা কাজ করেন, তাদের বুঝতে হবে তথ্যের মালিক জনগণ। তারা শুধু তথ্য সংরক্ষণ করেন। জনগণ তথ্য চাইলে দিতে হবে। 

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, সঠিক তথ্য অত্যন্ত শক্তিশালী। সঠিক তথ্য মানুষকে ক্ষমতায়িত করে। অপতথ্য ভয়ংকর হয়। অপতথ্য ধ্বংস ডেকে আনে। সঠিক তথ্য পাওয়া নিশ্চিত করার সাথে সাথে অপতথ্য রোধ করতে হবে।

সভায় প্রধান তথ্য কমিশনার ডক্টর আবদুল মালেক বলেন, তথ্য গোপনীয়তার সংস্কৃতি থেকে বাংলাদেশ বের হয়ে আসছে। তথ্য অবাধে পাওয়ার জন্য তথ্য অধিকার আইন করা হয়েছে। প্রতিবন্ধী, অনগ্রসর জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিতে তথ্য কমিশন কাজ করছে, তাদের চাহিত তথ্য প্রদানে কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করা হচ্ছে। 

তথ্য কমিশনার শহীদুল আলম ঝিনুক বলেন, তথ্য সকলের জানা প্রয়োজন। দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়তে তথ্য অধিকার আইনকে জানতে হবে এবং প্রয়োগ করতে হবে। 

তথ্য কমিশনার মাসুদা ভাট্টি বলেন, তথ্য পাওয়া নাগরিকে অধিকার। তথ্য কমিশন নাগরিকের সেই অধিকার নিশ্চিতে কাজ করছে। তিনি বলেন, কোনো দপ্তর তথ্য না দিলে আবেদনকারী আপীল করবেন এবং সেখানেও প্রতিকার না পেয়ে কমিশনে অভিযোগ করলে কমিশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে।

কর্মশালায় ইউএসএআইডি-এর অফিস ডিরেক্টর অ্যালেনা তানসি বলেন, তথ্যে প্রবেশাধিকার, বিশেষ করে বাংলাদেশের দলিত ও প্রান্তিক নারীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা নারীদের বিশেষ করে পিছিয়ে পরা নারীদের তথ্য প্রাপ্তির জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আপনাদের এবং কার্টার সেন্টারের সহযোগিতায় ইউএসএআইডি যেভাবে কাজ করছে তা নারীদের তথ্য অধিকার নিশ্চিতে বড় ভূমিকা রাখবে।

তিনি আরো বলেন, ইউএসএআইডি 'অ্যাডভান্সিং উইমেনস রাইটস অফ অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন ইন বাংলাদেশ' প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে যেটি কার্টার সেন্টার বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পটি নারীদের, বিশেষ করে সবচেয়ে প্রান্তিক নারীদের সরকার কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করে তার উন্নয়ন ঘটাবে। এটি দলিত ও প্রান্তিক নারীদের সামাজিক সেবা, অর্থনৈতিক সুযাগ এবং তাদের মৌলিক অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নাগরিক সমাজসহ বিভিন্ন গোষ্ঠীর সাথে অংশীদারিত্ব করতে সহায়তা করবে। 

কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কার্টার সেন্টারের চিফ অব পার্টি সুমনা সুলতানা মাহমুদ। কর্মশালার আলোচনা পর্বের শেষ পর্যায়ে তথ্য অধিকার নিউজ নিউজ লেটার ২০২৪ এর প্রথম সংখ্যা উদ্বোধন ঘোষণা করেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। 

কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর (বেদে, গারো, হাজং, সাঁওতাল, দলিত, হরিজন, চা শিল্পে নিয়োজিত কর্মী, জেলে, পার্বত্য নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী, তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী) ৬০ জন অংশগ্রহণ করেন।

কর্মশালায় তথ্য কমিশনার শহীদুল আলম ঝিনুক, তথ্য কমিশনার মাসুদা ভাট্টি, কমিশন সচিব জুবাইদা নাসরীন, ইউএসএআইডি-এর অফিস ডিরেক্টর অ্যালেনা তানসি, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট রুমানা আমিন এবং কার্টার সেন্টারের চিফ অব পার্টি সুমনা সুলতানা মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।

news