ভাবুন তো, নিজেরই জমিতে ঢুকতে না পেরে বছর বছর কোর্টে ছুটে বেড়াতে হচ্ছে, অথচ ফল মিলছে না! এমনই এক দীর্ঘ লড়াই শেষে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের গাজীরঘাট গ্রামের প্রায় ৭০ জন মানুষ অবশেষে তাদের স্বপ্নের ১১২ বিঘা জমির দখল ফিরে পেয়েছেন। কাহিনিটা যেন সিনেমার মতো—২০০১ সালে এক প্রভাবশালী গোষ্ঠীর হাতে জমি হারানো, মামলা, হামলা, পালিয়ে থাকা, আবার ফিরে এসে জমি পুনরুদ্ধার করা—সব কিছুই ঘটেছে বাস্তবে।
দীর্ঘদিন ধরে এই জমি চাষ করছিল হাদিস গাজীর নেতৃত্বে একটি গোষ্ঠী। কিন্তু ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে হাইকোর্ট পুরোনো রায় বহাল রাখলে মালিকেরা সাহস পেয়ে ৫ আগস্ট সরকার পতনের প্রেক্ষাপটে জমিতে সাইনবোর্ড পুঁতে, ঘেরাবেড়া দিয়ে আবার নিজেদের দখল প্রতিষ্ঠা করেন। এর পরেও বিপদ কাটেনি। রাতের আঁধারে ফের হামলা, আহত ৭ জন, আবার মামলা—হাদিস গাজী এখন জেলে।
এই জমির ইতিহাস রীতিমতো রক্তাক্ত। ২০০১ সালে কহিনুর বেগমের স্বামীকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা, পুড়িয়ে দেয় বাড়িঘর। তারপর সেই জমিতে তারা তৈরি করে ঘের, করে চাষ। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আইনের চাকা ঘুরেছে। দীর্ঘ লড়াইয়ে কোর্টের রায়, মানুষের একতা—সব মিলিয়ে ফিরে এসেছে আশার আলো।
এখনো এলাকাবাসীর মনে কিছুটা আতঙ্ক থাকলেও, সবাই চাইছে শান্তি ও স্থায়ীত্ব। পুলিশও নজর রাখছে পরিস্থিতির ওপর। তবে গ্রামে এখন একটাই কথা—“অবশেষে নিজের জমিতে দাঁড়ানোর স্বপ্নটা পূরণ হলো!”
#বাগেরহাট #ভূমিদখল #ন্যায়েরজয় #সুন্দরবনউপকূল #গ্রামবাংলারগল্প


