উত্তরা পশ্চিম থানার ১০ নম্বর সেক্টরের এক্সপ্রেস মল গেস্ট হাউজের জেনারেল ম্যানেজার মোঃ কামরুল হাসান (৩১) কর্তৃক একটি লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ১০ জন চাঁদাবাজ গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনার সূত্রপাত ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে, যখন এক্সপ্রেস মল গেস্ট হাউজটি তাদের কার্যক্রম শুরু করে। মলটির মালিক ও কর্মীদের উপর একাধিকবার চাঁদা দাবি করে আসছিল একটি চক্র, যা শেষ পর্যন্ত হুমকি প্রদান ও ভাংচুরের আকার নেয়।

এ ঘটনায় গত ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে গেস্ট হাউজটির মেইন গেট ভাঙচুর এবং ২য় তলায় প্রবেশ করে মূল্যবান মালামাল চুরির অভিযোগ ওঠে। আসামীরা গেস্ট হাউজের বিভিন্ন রুমের দরজা ভেঙে মূল্যবান ল্যাপটপ, অ্যাপল ওয়াচ, গিটার সহ অন্যান্য জিনিসপত্র চুরি করে। তারা তখন গেস্ট হাউজের কর্মীদের মারধরও করে, যার ফলে কর্মীরা শারীরিকভাবে আহত হন। এরপর তারা চাঁদা দাবি করে হুমকি প্রদান করে যে, চাঁদা না দিলে গেস্ট হাউজটি বন্ধ করে দেয়া হবে।

এ ঘটনায় গেস্ট হাউজের মালিক মোঃ কামরুল হাসান ৯৯৯ নম্বরে কল করে পুলিশকে খবর দেন। উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হাফিজুর রহমান (পিপিএম-সেবা) ও তার টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং ১১ জন আসামীকে গ্রেফতার করে। এই গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় চুরি হওয়া মালামাল, যেমন একটি কালো এইচপি ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ, একটি সিলভার এইচপি ল্যাপটপ, একটি স্মার্ট হাতঘড়ি, একটি গিটার এবং চাঁদা বাবদ নগদ ১৩,০০০ টাকা। এছাড়া তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও জব্দ করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন: মোঃ রেজাউল কবির (৪৪), মোঃ আশরাফুল ইসলাম রিয়াদ (৩২), মোঃ মোকসেদুল ইসলাম (৩৪), মোঃ আকাশ আলী (২৬), মোতালেব হোসেন (৩৪), মোঃ জুয়েল রানা (২৮), মোঃ আবুল বাশার (৫২), মোঃ শহিদুল ইসলাম (৫৩), সালমান সামি (২৪), এ.কে.এম মাসুদুজ্জামান (৭২) ও অন্যান্য অজ্ঞাত পরিচয়ের আসামীরা। 

আসামীরা বিভিন্ন সময়ে গেস্ট হাউজের মালিক কামরুল হাসানকে হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করেছিল। তারা বলেছিল, চাঁদা না দিলে গেস্ট হাউজটি বন্ধ করে দেয়া হবে। একাধিকবার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা হামলা ও ভাংচুর করে। ১৪ জানুয়ারি তারা প্রায় ৮০,০০০ টাকা ক্ষতি সাধন করে এবং বিভিন্ন ধরনের মালামাল চুরি করে। 

পুলিশের পক্ষ থেকে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলার নম্বর ৩৫, তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ধারা ১৪৩/৪৪৭/৪২৭/৩২৩/৩৮৫/৩৮৬/৩৮০/৪১১/৩৪ পেনাল কোড অনুযায়ী। গ্রেফতারকৃতদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। 

এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং স্থানীয়রা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্রুত পদক্ষেপে সন্তুষ্ট। চাঁদাবাজি ও হুমকির ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ী ও নাগরিকরা আতঙ্কিত, তবে পুলিশ এখন দৃঢ়ভাবে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে।

news