হঠাৎ করে আসা ঝড় যে কতটা ভয়ানক হতে পারে, তা গতকাল চাঁদপুরের মেঘনায় চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। দুপুর গড়াতে না গড়াতেই, কালো মেঘে আকাশ ছেয়ে যায়, শুরু হয় তীব্র কালবৈশাখী। আর সেই ঝড়েই ডুবে গেল ‘এমভি রিয়া-ইয়াসিন’ নামের একটি সিমেন্টবোঝাই ট্রলার।
চাঁদপুর সদর উপজেলার কানুদী এলাকায় ঘটনা ঘটেছে বৃহস্পতিবার বিকেলে। ট্রলারটি নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাট থেকে ৪,২০০ বস্তা সিমেন্ট নিয়ে যাচ্ছিল চাঁদপুর সদরের বাগড়া বাজারের একটি ডিপোতে। মাঝপথে ঝড়ের কবলে পড়ে সেটি। আশেপাশে তখন নদীতে ছিল অল্প কয়েকটি নৌযান—কেউ ভাবেওনি, এই ট্রলারটি একেবারে তলিয়ে যাবে।
ঝড়ের ধাক্কায় হঠাৎ দুলে ওঠে ট্রলারটি, আর মুহূর্তেই ব্যালান্স হারিয়ে জলের নিচে মিলিয়ে যেতে শুরু করে। তবে ভাগ্য ভালো বলতে হয়, ট্রলারের মাস্টার মো. জাহাঙ্গীর ও তার সঙ্গী শ্রমিকরা তড়িঘড়ি নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিজেদের জীবন বাঁচান। আর ঠিক তখনই আশেপাশে মাছ ধরছিলেন কিছু জেলে—তারা এক মুহূর্ত দেরি না করে এগিয়ে যান, নদী থেকে তুলে আনেন সবাইকে।
এ যেন সিনেমার মতো রোমাঞ্চকর একটা দৃশ্য—ঝড়, বজ্রপাত, ঢেউয়ের তাণ্ডব আর সেই সঙ্গে মানুষের সাহস ও সহমর্মিতার দুর্দান্ত এক নিদর্শন।
চাঁদপুর নদী থানার অফিসার ইনচার্জ ইকবাল আহমেদ জানান, মাস্টার জাহাঙ্গীর পুরো ঘটনার বিবরণ দিয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তাঁর মুখে শোনা গেছে, ঝড়টা এতটাই হঠাৎ করে এসেছিল যে কিছু বোঝার আগেই ট্রলার ডুবে যায়।
যদিও ট্রলারটি ডুবে গেছে এবং সিমেন্টের বিশাল চালানটি পানিতে মিশে গেছে, তবুও সবচেয়ে বড় কথা—মানুষগুলো প্রাণে বেঁচে গেছেন। এই ছোট ছোট সাফল্যই তো আমাদের দিনগুলোকে একটু একটু করে ভালো করে তোলে। আর সাহসী জেলেদের প্রতি কৃতজ্ঞতাও আমাদের থাকল—তাঁদের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ না থাকলে পরিস্থিতি হয়তো অন্যরকম হতে পারত। খবর ইউএনবির
#মেঘনানদী #চাঁদপুরসংবাদ #কালবৈশাখীঝড় #জীবনরক্ষা #নদীনির্ভরজীবন


