ঢাকা শহরের ব্যস্ততা, যানজট আর কোলাহলের মধ্যে রাত কখনও কখনও থমকে যায় আতঙ্কে। ১ এপ্রিল ভোররাতে এমনই এক ঘটনা ঘটেছিল ভাটারার জোয়ার সাহারা খাঁ পাড়ায়। হঠাৎ একটি প্রাইভেটকার এসে দাঁড়ায় স্থানীয় রাশেদুজ্জামান রাজুর বাড়ির সামনে। মুহূর্তেই শুরু হয় চিৎকার, গালি-গালাজ, আর হঠাৎ করেই দুই রাউন্ড গুলির শব্দ! রাতের নীরবতা ভেদ করে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে ভয়। বাড়ির গেট লাথি মেরে ভেঙে ফেলা হয়, সিসিটিভি ক্যামেরাও রেহাই পায় না। স্থানীয়রা ঘর থেকে বের হতে চাইলেও চোখের সামনে বন্দুক দেখে সবাই পেছনে সরে যান।
এই ভয়াবহ কাণ্ডের মূল হোতা ছিলেন আলিনূর পাভেল ওরফে পাভেল, বয়স ৩২। তাঁর সঙ্গে ছিল আরও ১০-১২ জনের একটি দল। পুরো ঘটনাটি যেন সিনেমার মতো—কিন্তু এটা বাস্তব, এবং এই বাস্তবতায় ছিল গুলির আওয়াজ আর একঝাঁক নিরীহ মানুষের আতঙ্কিত চোখ।
ভুক্তভোগী রাশেদুজ্জামান রাজু থানায় মামলা করেন, এবং তার পর থেকেই গোয়েন্দা পুলিশের অনুসন্ধান শুরু হয়। দীর্ঘ ১৮ দিন পর অবশেষে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকে পাভেলকে গ্রেফতার করে ডিবি। ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া শাখার উপ-কমিশনার মো. তালেবুর রহমান জানান, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করেই পাভেলকে শনাক্ত করা হয়।
পাভেলের গ্রেফতারের খবরে এলাকায় কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন স্থানীয়রা। কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়—একজন মানুষ কীভাবে এতটা দুঃসাহসী হয় যে, প্রকাশ্যে গুলি ছুড়ে ভয় দেখাতে পারে? তার চেয়েও বড় প্রশ্ন, তার পেছনে কারা আছে? কারা তাকে সাহস জুগিয়েছে?
এই ঘটনা আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, আমাদের শহর এখনও নিরাপদ নয় যতক্ষণ না প্রতিটি অপরাধীর বিচার হয়। পাভেলের মতো যারা অস্ত্র দেখিয়ে ভয় ছড়াতে চায়, তাদের ধরতেই হবে, এবং শুধু ধরলেই হবে না—দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে যেন অন্য কেউ এ ধরনের কাজ করার আগে দু'বার ভাবে।
তবে এক্ষেত্রে ডিবি পুলিশের তৎপরতা সত্যিই প্রশংসনীয়। দ্রুত সময়ে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে অপরাধীকে আটক করেছে, যা আমাদের আশাবাদী করে। এখন শুধু অপেক্ষা, বাকিদেরও যেন দ্রুত আইনের আওতায় আনা হয়।
কারণ শহরের মানুষ চায় নিশ্চিন্তে ঘুমোতে, তারা চায় দুষ্টু লোকেরা নয়, শান্তির মানুষগুলো শহরের নিয়ন্ত্রণে থাকুক। খবর ইউএনবির
#ঢাকানিরাপত্তা #ভাটারাঘটনা #ডিবিপুলিশ #অস্ত্রসন্ত্রাস #আইনেরশাসন


