পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক ঘটনার পর বাংলাদেশ সরকারের মন্তব্য নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। শুক্রবার, ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রন্ধীর জৈস্বাল সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, বাংলাদেশ সরকারের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে নিজেদের সংখ্যালঘু জনগণের অধিকার সুরক্ষিত করতে মনোযোগী হতে হবে, অন্যের বিষয় নিয়ে মন্তব্য করা নয়।

পশ্চিমবঙ্গে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতি বাংলাদেশ সরকারের অবস্থানকে ভারতের পক্ষ থেকে “অপ্রয়োজনীয় ও অযৌক্তিক” মন্তব্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। ভারতীয় মুখপাত্র রন্ধীর জৈস্বাল টুইটার (এখন X) মাধ্যমে জানান, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান নির্যাতন, যেখানে অপরাধীরা অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে, সে বিষয়টি নিয়ে ভারত আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সুতরাং, পশ্চিমবঙ্গের ঘটনার সঙ্গে বাংলাদেশের মন্তব্যে তারা কোনো সম্পর্ক বা সমান্তরাল দেখতে পাচ্ছে না।

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক মন্তব্যের পর, ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, “এটা একেবারেই অপ্রয়োজনীয় এবং অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত চেষ্টা যা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের গভীরতার প্রতি অসম্মানজনক।” তিনি আরও বলেন, ভারতে ধর্মীয় সহিংসতার ঘটনা নিয়ে মন্তব্য করার আগে বাংলাদেশকে নিজেদের সংখ্যালঘু জনগণের নিরাপত্তা ও অধিকার নিয়ে ভাবা উচিত।

এদিকে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, তারা মুর্শিদাবাদে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় বাংলাদেশের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। প্রধান উপদেষ্টা শফিকুল আলম বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিবৃতিতে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকার কোনোভাবেই মুর্শিদাবাদে ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয় এবং এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মুসলিমদের ওপর যে আক্রমণ চালানো হয়েছে, তার নিন্দা জানানো হয়েছে এবং ভারতের সরকার ও পশ্চিমবঙ্গের শাসকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে যেন তারা সংখ্যালঘু মুসলিম জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ইতোমধ্যে মুর্শিদাবাদ সহিংসতার তদন্তের জন্য বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যদিও বাংলাদেশ সরকারের প্রতি তাদের যে অভিযোগ রয়েছে, তা নিয়ে দ্বিমত প্রকাশ করা হয়েছে, তবুও ভারতীয় মিডিয়া জানাচ্ছে যে, প্রাথমিক তদন্তের ফলাফলে দেখা গেছে, বাংলাদেশের কিছু ব্যক্তি এই সহিংসতায় জড়িত থাকতে পারে।

এটি এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মধ্যে। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে ভালো হলেও, সাম্প্রতিক সময়ে নানা কারণে কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে সীমান্ত এলাকা, মুর্শিদাবাদ এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার বিষয়ক নানা বিবৃতির পর উত্তেজনা বেড়েছে।

এখন সময় এসেছে, দু’দেশের মধ্যে সংলাপ বাড়িয়ে এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা বজায় রেখে কোনো সমাধান বের করার। এসব ঘটনায় বাড়তি উত্তেজনা কখনোই ফলপ্রসূ হতে পারে না, বরং শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানই শ্রেয়। খবর ইউএনবির

#ভারতবাংলাদেশ #পশ্চিমবঙ্গঘটনা #মুর্শিদাবাদ #সংখ্যালঘু অধিকার #আন্তর্জাতিকসম্পর্ক

news