শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে জাতীয় ঈদগাহে

কোভিডের কারণে গত দুই বছর জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাত হয়নি। তবে এবার করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। ফলে জাতীয় ঈদগাহে এবার অনুষ্ঠিত হবে ঈদুল ফিতরের জামাত। 

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২ বা ৩ মে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৮টায়। তবে আবহাওয়া প্রতিকূল থাকলে ঈদের প্রধান জামাত সকাল ৯টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত হবে। 

জাতীয় ঈদগাহ মাঠে এবার ৯০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। এছাড়া সাড়ে পাঁচ হাজার নারীর জামাতে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা থাকবে। জাতীয় ঈদগাহ মাঠে রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী, সচিবসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ঈদ জামাতে অংশ নেবেন। এজন্য ঈদগাহ মাঠকে ঘিরে গড়ে তোলা হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয়।সিসিটিভি ক্যামেরা, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি পাশাপাশি থাকবে ডগ স্কোয়াড। 

এছাড়া মোবাইল ওয়াচ টাওয়ার, মোবাইল কমান্ড সেন্টার, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট সক্রিয় থাকবে। র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও পুলিশের দুটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থাকবে মাঠে।

এদিকে, ঈদ জামাতের জন্য হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। প্রতিবারের মতো এবারো পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের ঈদ জামাতের জন্য পৃথক ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) জাতীয় ঈদগাহ ময়দান ঘুরে দেখা গেছে, মাঠজুড়ে ৮০-৯০ জন শ্রমিক মাঠ প্রস্তুতের কাজে মগ্ন। বাঁশ দিয়ে মাঠের চারদিকে ঘেরা ও ওপরের কাঠামো তৈরি শেষ। হালকা বৃষ্টিতে যাতে পানি না পড়ে সেজন্য দেয়া হয়েছে ত্রিপল। তার নিচে দিয়ে সাদা সামিয়ানা টাঙানো হচ্ছে। সামিয়ানা দিয়ে চারপাশ ঘেরার কাজও শেষপর্যায়ে।

মাঠে প্রবেশের প্রধান ফটকে চলছে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। ঈদগাহের ঠিক সামনের দিকে মিনারের সৌন্দর্য বাড়াতে কাজ করছেন কয়েকজন শ্রমিক। মাঠের আশপাশজুড়ে দেয়াল ও গাছে চলছে রঙের কাজ। মাইক, বিদ্যুৎ সংযোগ, ফ্যান ও সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর কাজও চলছে সমানতালে। সাধারণ অজুখানার পাশাপাশি থাকবে নারীদের জন্য পৃথকভাবে অজুর ব্যবস্থা। এছাড়া ভিআইপিদের অজুর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ঈদগাহ মাঠ প্রস্তুতে টেন্ডার পেয়েছে ‘পিয়ারো সরদার অ্যান্ড সন্স’। এ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘গত ৫ এপ্রিল থেকে মাঠ পরিচর্যাসহ ঈদ জামাতের জন্য সার্বিক প্রস্তুতি শুরু করা হয়। দৈনিক দেড় শতাধিক শ্রমিক কাজ করছেন। প্রস্তুতির কাজ প্রায় শেষদিকে। এখন দিনে শতাধিক শ্রমিক কাজ করছেন। আশা করছি- এক-দুদিনের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ হয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘বৃষ্টির শঙ্কা থাকায় মাঠের দুই লাখ ৭০ হাজারের বেশি বর্গফুট জায়গায় ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। যাতে বৃষ্টির পানি সহজে মাঠে না ঢুকে। গরমে যাতে নামাজ আদায় অসহনীয় না হয়ে ওঠে এজন্য ১০টি বড় এয়ারকুলার থাকবে। এছাড়া ৭০০টি সিলিং ফ্যান এবং এক হাজার স্ট্যান্ড ফ্যানের ব্যবস্থা রয়েছে। ৯০ হাজারের মতো মুসল্লির একসঙ্গে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে। নারীদের জন্য রয়েছে পৃথক ব্যবস্থা।’

news