মৌলভীবাজারে মৃত ক্রেতার পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা সহায়তা দিলো ওয়ালটন প্লাজা

রফাত মিয়ার হাতে চেক তুলে দেন স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ এবং ওয়ালটন প্লাজার কর্মকর্তারা

মাত্র ১ হাজার টাকা ডাউনপেমেন্ট দিয়ে কিস্তি সুবিধায় ওয়ালটন প্লাজা থেকে তিনটি পণ্য কিনেছিলেন মৌলভীবাজার সদরের গৃহিণী সেলিনা বেগম। মাত্র দুটি কিস্তি পরিশোধের পর অসুস্থ হয়ে মারা যান তিনি। এ অবস্থায় অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছে ওয়ালটন প্লাজা। বাকি সব কিস্তি মওকুফ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ওই পরিবারকে দেওয়া হয়েছে ৫০ হাজার টাকা সহায়তা। ওয়ালটন প্লাজার ‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষা নীতির’ আওতায় এই আর্থিক সহায়তা পেয়েছে সেলিনার পরিবার।

উল্লেখ্য, কিস্তিতে পণ্য কেনা গ্রাহকদের জন্য ‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষা নীতি’ সুবিধা দিচ্ছে ওয়ালটন প্লাজা। এর আওতায় দেশের যেকোনো ওয়ালটন প্লাজা থেকে কিস্তিতে পণ্য ক্রয়কারীদের কিস্তি সুরক্ষা কার্ড দেওয়া হচ্ছে। কিস্তি চলমান থাকা অবস্থায় ক্রেতার মৃত্যু হলে পণ্যমূল্যের ভিত্তিতে ৫০ হাজার থেকে ৩ লাখ এবং তার পরিবারের কোনো সদস্য মৃত্যুবরণ করলে ২৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত সহায়তা দিচ্ছে ওয়ালটন প্লাজা। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পণ্যের অনাদায়ী কিস্তির টাকা সমন্বয়ের পর অবশিষ্ট টাকা ক্রেতা বা তার পরিবারকে দেওয়া হচ্ছে।

সোমবার (১৭ এপ্রিল, ২০২৩) শহরের কলেজ পয়েন্টে রাজনগর ওয়ালটন প্লাজায় আনুষ্ঠানিকভাবে সেলিনা বেগমের স্বামী রফাত মিয়ার হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দেয় ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজনগর থানার ওসি হুমায়ুন কবীর, ওয়ালটনের ডিভিশনাল ক্রেডিট ম্যানেজার মাকসুদ আলম, রিজিওনাল সেলস ম্যানেজার কামরুল হাসান, রিজিওনাল ক্রেডিট ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম এবং মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকার ওয়ালটন প্লাজায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যানেজারগণ।

জানা গেছে, মৃত ক্রেতার গ্রামের বাড়ি জেলার কনকপুর ইউনিয়নের রংদাস গ্রামে। পরিবারসহ শহরের ওয়াবদা এলাকায় বসবাস তাদের। চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি ওয়ালটন প্লাজা থেকে কিস্তি সুবিধায় একটি করে ফ্রাই প্যান, রাইস কুকার এবং ব্লেন্ডার কেনেন সেলিনা বেগম। তার কিস্তি ক্রেতা সুরক্ষা কার্ড নাম্বার ৭৪৩৭৪৬৮২৬৩১৯১০৬৬। গত ৫ এপ্রিল কিডনি জটিলতায় ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ৪ মেয়েসহ ৬ সদস্যের পরিবার তাদের। চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলেন স্বামী রফাত মিয়া। হয়ে পড়েন ঋণগ্রস্ত।

এ অবস্থায় ‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষা নীতি’র আওতায় মৃত গ্রাহকের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে ওয়ালটন প্লাজা। মৃত কিস্তি ক্রেতা সেলিনার পরিবারকে দেওয়া হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। এর থেকে কিস্তির অবশিষ্ট টাকা পরিশোধের পর পরিবারটি পেয়েছে নগদ ৪৫ হাজার ৯০০ টাকা।

সেলিনার মুদি দোকানি স্বামী রফাত মিয়া জানান, বাসায় এর আগে থেকেই ওয়ালটনের বিভিন্ন পণ্য ব্যবহার করতেন তারা। ওয়ালটনের কিস্তি ক্রেতা সুবিধার বিষয়টি আগে জানতেন না। স্ত্রীর আবদারে তার নামেই ওয়ালটনের ওই পণ্যগুলো কেনা হয়েছিল। ক্রেতা মারা যাওয়ায় কিস্তি মওকুফ করে উল্টো পরিবারকে আর্থিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়টিতে অবাক তারা। এটা বিস্ময়ের ব্যাপার বলেও জানান তিনি। প্রতিটি কোম্পানির এমনভাবেই ক্রেতার পাশে থাকা উচিৎ বলে মন্তব্য করেন রফাত মিয়া। ওয়ালটন বিশ্বের এক নম্বর কোম্পানিতে পরিণত হবে, এটাই তার প্রত্যাশা।

অনুষ্ঠানে রাজনগর থানার ওসি হুমায়ুন কবীর বলেন, ক্রেতা মারা গেলে কিস্তি মওকুফসহ আর্থিক সহায়তা দেওয়া ওয়ালটনের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এর উদাহরণ হতে পারে কেবল ওয়ালটনই। কিস্তিতে পণ্য কিনে কিস্তি পরিশোধের আগে মারা গেলেও পণ্যের কোনো দায়ভার গ্রহণ করতে হয় না পরিবারের জীবিত সদ্যদের। এ ধরনের মহৎ উদ্যোগ আগে কখনো দেখা যায়নি। এভাবে বিপদের দিনে গ্রাহকদের পাশে থেকে তাদের মন জয় করে নিয়েছে ওয়ালটন। আমাদের প্রত্যাশা ওয়ালটনের মতো অন্যান্য কোম্পানিও এভাবে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে কাজ করবে।

রাইজিংবিডি.কম

news