গভীর সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের বহুল প্রত্যাশিত দরপত্র জমা না পড়ায় অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। অর্থনৈতিক কারণের পাশাপাশি রাজনৈতিক অস্থিরতাও বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। নির্বাচিত সরকার না আসা পর্যন্ত এই সম্ভাবনা বাস্তবে রূপ নেওয়া কঠিন বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
দেশীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলোর উৎপাদন কমতে থাকায় গভীর সমুদ্র নিয়ে আশার আলো জ্বলেছিল। তবে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের পরও ৭টি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান দরপত্র সংগ্রহ করলেও কেউই জমা দেয়নি। বিষয়টি অনুসন্ধানে গঠিত কমিটির রিপোর্টে বেশ কিছু কারণ উঠে এলেও সংশ্লিষ্টরা মূলত রাজনৈতিক কারণকেই বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন।
বিশ্বখ্যাত মার্কিন কোম্পানি এক্সোন মবিল বাংলাদেশের সমুদ্র ব্লক ইজারা নিতে সবচেয়ে বেশি আগ্রহী ছিল। ২০২৩ সাল থেকে তারা বিভিন্ন দেনদরবার চালালেও শেষ পর্যন্ত দরপত্র জমা দেওয়া থেকে বিরত থাকে। নির্ধারিত সময় বাড়িয়েও কোনো লাভ হয়নি, ফলে দরপত্র পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।
এক্সোন মবিল দরপত্র না দেওয়ার পেছনে তিনটি প্রধান কারণ উল্লেখ করেছে:
১. গ্যাসের নির্ধারিত দাম তাদের প্রত্যাশার তুলনায় কম। কনসালটেন্ট প্রতিষ্ঠান উড ম্যাকেঞ্জি ১০ ডলারের কাছাকাছি দাম সুপারিশ করলেও সরকার তা বাস্তবায়ন করেনি।
২. গভীর সমুদ্র থেকে স্থলভাগে গ্যাস পরিবহনের পাইপলাইনের খরচ হিসেবে সঞ্চালন চার্জ প্রত্যাহারের অনুরোধ।
৩. ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ড (WPPF)-এর বাধ্যবাধকতা নিয়ে আপত্তি।
এছাড়া, শেভরন, চীনা প্রতিষ্ঠান CNOOC-সহ অন্যান্য কোম্পানিগুলোর অভিযোগ ছিল ডাটা প্যাকেজের উচ্চমূল্য ও পর্যাপ্ত তথ্যের অভাব।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের দরপত্র নীতিতে সংশোধন না আনলে আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো আগ্রহী হবে না, ফলে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে।


