বাংলাদেশের কৃষকদের এবারও আলুর ভালো ফলন হয়েছে, কিন্তু সেই সুখবরই এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে ২০ টাকা খরচ হলেও বিক্রি করতে হচ্ছে মাত্র ১২-১৩ টাকায়, ফলে প্রতি কেজিতে ৭-৮ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের।
ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক আহসানুর রহমান হাবিব বলেন, “বীজ, সার, শ্রমিক খরচ মিলিয়ে প্রতি বিঘায় আমার খরচ হয়েছে লাখ টাকার বেশি, অথচ বিক্রি করে পাচ্ছি মাত্র ৬৫ হাজার! এত লোকসান হলে আমরা বাঁচবো কী করে?”
কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আলুর পর্যাপ্ত সংরক্ষণ ব্যবস্থা না থাকায় কৃষকদের এই দুর্দশা। মুন্সীগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, বগুড়া, মেহেরপুরসহ শীর্ষ আলু উৎপাদনকারী জেলাগুলোর অধিকাংশ চাষীই কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন, কারণ হিমাগারে জায়গা নেই বা সংরক্ষণের খরচ বহন করা অসম্ভব।
মুন্সীগঞ্জের কৃষক শফিকুল রহমান জানান, “আগে যেখানে প্রতি কেজি আলু সংরক্ষণ করতে ৪-৫ টাকা লাগতো, এখন হিমাগার মালিকরা ৮ টাকা চাইছে। এত টাকা দিয়ে আমরা রাখবো কীভাবে?”
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, প্রতি বছর আলুর উৎপাদন ও বাজারদর নিয়ে সংকট সৃষ্টি হয়, অথচ সরকার কার্যকর কোনো দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেয় না।
বাজার বিশ্লেষকরা পরামর্শ দিচ্ছেন, সরকারের উচিত সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্য মূল্যে আলু ক্রয় ও পর্যাপ্ত সংরক্ষণ নিশ্চিত করা, যাতে কৃষকরা ন্যায্য দাম পান এবং বাজারে অস্থিরতা না হয়।
এদিকে, রপ্তানি খাতকে আরও সম্প্রসারিত করার কথাও বলছেন বিশেষজ্ঞরা। নেপাল, দুবাই ও মালয়েশিয়ায় আলু রপ্তানি শুরু হয়েছে, তবে সেটা ব্যাপক আকারে না হলে কৃষকদের তেমন কোনো লাভ হবে না।


