ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের সমস্যা দিন দিন জটিলতর হচ্ছে। গত ডিসেম্বরের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকায় পৌঁছে গেছে – যা মোট ঋণের ২০.২০ শতাংশ। তুলনামূলকভাবে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের মাত্র ৯ শতাংশ ছিল। এক বছরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ৯৯ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকায় বৃদ্ধি পায়, যা ব্যাংক খাতের আর্থিক অবস্থাকে গভীর সংকটে ফেলে দিয়েছে।
আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ. মনসুর এই তথ্য তুলে ধরেন। সম্মেলনে ডেপুটি গভর্নরসহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। গভর্নর জানান, "খেলাপি ঋণের এই বৃদ্ধি আমাদের আর্থিক ব্যবস্থার স্থায়িত্বে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। ভবিষ্যতে এ সমস্যা আরও বাড়তে পারে, তাই তা মোকাবেলায় আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্যোগী।"
ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এখন কঠোর আইন প্রণয়ন, ঋণ পুনর্গঠন এবং ঋণ সংক্রান্ত দায়বদ্ধতা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে খেলাপি ঋণের সমস্যা কমানোর চেষ্টা করছে। ঋণগ্রহীতাদের যোগ্যতা যাচাই প্রক্রিয়া এবং ঋণ পুনরুদ্ধারের কার্যক্রমে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনাও সামনে আনা হয়েছে। এই উদ্যোগগুলো ব্যাংক খাতের ঝুঁকি হ্রাসে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, খেলাপি ঋণের বৃদ্ধি ব্যাংকিং সেক্টরে গভীর দুর্বলতার ইঙ্গিত বহন করে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যাতে আর্থিক ব্যবস্থার স্থায়িত্ব ও সচ্ছলতা নিশ্চিত করা যায়। বর্তমান আর্থিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য ব্যাংক খাতের মধ্যে কঠোর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরোপ করা অপরিহার্য বলে বিশেষজ্ঞরা আশাবাদী।


