যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল অফিস (ওএফএসি) ও পররাষ্ট্র দপ্তর ইরানের পেট্রোলিয়াম-সম্পর্কিত পণ্য পরিবহন ও বাণিজ্যে সহায়তাকারী ৩০টিরও বেশি সংস্থা ও জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক অক্টেন এনার্জি গ্রুপ এফজেডসিও রয়েছে, যারা বাংলাদেশে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) সরবরাহ করে। এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জ্বালানি আমদানিতে নতুন উদ্বেগের স্রোত সৃষ্টি করেছে।
গত বছরের ৩ অক্টোবর অক্টেন এনার্জির ৪০ হাজার ৩৯.১৩ টন এলপিজি পানামা-ফ্ল্যাগযুক্ত জাহাজ ‘জিএজেড জিএমএস’ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে যায়। এরপর বাংলাদেশ এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন (এলওএবি) চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার কাছে অভিযোগ তুলে যে, সরবরাহকৃত এলপিজি ইরানের উৎস থেকে এসেছে – নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত দেশ। অভিযোগে জাহাজটি আটক করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (সিপিএ) কাস্টমস, কোস্ট গার্ড ও মেরকেন্টাইল মেরিন বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, জাহাজ ‘জিএজেড জিএমএস’ ৪ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪-এর মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মিনা রাশিদ বন্দরে জাহাজ-থেকে-জাহাজ পদ্ধতিতে এলপিজি লোড করে, এরপর খোরফাক্কানে জ্বালানি সংগ্রহ করে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এতে ইরানি উৎসের কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
তবে, মেরিটাইম গোয়েন্দা সংস্থা লয়েডস লিস্টের ডিসেম্বরে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সিপিএ কমিটি ‘জিএজেড জিএমএস’ ও ‘ক্যাপ্টেন নিকোলাস’ নামের আরেকটি জাহাজের কার্গোর উৎস নির্ধারণে ত্রুটি করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শুধু অক্টেন এনার্জির ওপর নয়, ইরানের পেট্রোলিয়াম বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের বিরোধেও কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়। এ নিষেধাজ্ঞার ফলে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে বড় প্রভাব পড়তে পারে, যার ফলে সরকারের সামনে জ্বালানি নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার কঠিন চ্যালেঞ্জ দাঁড়িয়েছে।


