বিজ্ঞাপনী প্রচারের মাধ্যমে ‘ভুল বার্তা’ প্রেরণ সংক্রান্ত মামলায় স্বঘোষিত যোগগুরু রামদেবকে তলব করলেন সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার শীর্ষ আদালত রামদেবের সঙ্গে তাঁর সহযোগী তথা পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর আচার্য বালকৃষ্ণকেও ডেকে পাঠিয়েছে।

আনন্দবাজার জানায়, আদালত অবমাননা সংক্রান্ত একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে রামদেবের সংস্থা পতঞ্জলিকে নোটিস দিয়ে কৈফিয়ত তলব করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু সংস্থার তরফে সেই নোটিসের কোনও জবাব না পাওয়ায় আবার তলব করা হয়েছে রামদেবকে। 

মঙ্গলবার বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি আহসানউদ্দিন আমান্নুলার বেঞ্চ রামদেব এবং বালকৃষ্ণকে আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেয়।

গত ২১ নভেম্বর রামদেবের সংস্থার উদ্দেশে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, বিভিন্ন রোগের নিরাময় হিসাবে তাঁর সংস্থার বিজ্ঞাপনে ‘অসত্য এবং বিভ্রান্তিকর দাবি’ বন্ধ করতে হবে। না হলে প্রতিটি দাবির জন্য জরিমানা হিসাবে ১ কোটি টাকা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে রামদেবের সংস্থাকে।

রামদেবের সংস্থাকে ঘিরে বিতর্কের শুরু করোনা পর্বে। তখন ‘কোভিড প্রতিরোধী’ ওষুধ ‘করোনিল কিট’ বাজারে এনেছিল পতঞ্জলি। অভিযোগ, কোভিড প্রতিরোধী না হওয়া সত্ত্বেও শুধু করোনিল কিট বিক্রি করেই প্রায় আড়াইশো কোটি রুপির বেশি মুনাফা করে রামদেবের সংস্থা।

২০২০ সালের ২৩ জুন প্রথম বার বাজারে আসে ‘করোনিল কিট’। করোনিল এবং শ্বাসারি বটি নামে দু’ধরনের ট্যাবলেট এবং ‘অণু তেল’ নামের ২০ মিলিলিটারের একটি তেলের শিশি নিয়ে তৈরি ওই কিটের দাম রাখা হয় ৫৪৫ রুপি।

আলাদা ভাবে ট্যাবলেট এবং তেল কেনা যাবে বলেও জানানো হয়েছিল রামদেবের সংস্থার তরফে। কোভিড অতিমারির সময় বিপুল বিক্রি হয়েছিল ওই ওষুধ। রামদেবের সংস্থা হিসাব দিয়ে জানিয়েছিল, মোট ২৩ লাখ ৫৪ হাজার করোনিল কিট বিক্রি করেছিল তারা। কিন্তু সংস্থার লাভের মাঝেই শুরু হয় করোনিল-বিতর্ক।

সংস্থার বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে মিথ্যা বিজ্ঞাপনী প্রচারের অভিযোগ এনেছিল আইএমএ। রামদেবের সংস্থার বিরুদ্ধে মামলার শুনানিতে সরকারের উদ্দেশেও বেশ কিছু বার্তা দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। 

আদালতের তরফে বলা হয়েছিল, এমন অসত্য বা বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনী প্রচার বন্ধ করতে সরকারের কোনও নির্দেশিকা থাকলে ভাল হয়। সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্যের পর রামদেব কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ‘‘যত রকম খারাপ এবং অপশক্তি রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংস্থার লড়াই চলছে এবং চলবে।’’

পিটিআই সূত্রে খবর, ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি রাজস্থানের বাড়মের জেলায় একটি অনুষ্ঠানে মুসলিমদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন রামদেব। সন্ত্রাস ছড়ানো থেকে শুরু করে হিন্দু মহিলাদের অপহরণের ঘটনায় মুসলিমরা জড়িত বলে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি। এই মন্তব্যের জেরেই রামদেবের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল।

news