ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ১৪০ কোটি ভারতীয় বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দিল্লির লাল কেল্লায় দেশটির স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই নিয়ে একটি কোথাও বলেননি মোদি ।
তিনি জানান, বাংলাদেশের পরিস্থিতি যাতে দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে ওঠে, সেই আশাপ্রকাশ করছেন। সেইসঙ্গে বর্তমানে বাংলাদেশে হিন্দু এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করারও বার্তা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। লালকেল্লা থেকে মোদী বলেন, ‘বাংলাদেশে যা কিছু হয়েছে, সেটা নিয়ে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে চিন্তা যে হচ্ছে, সেটা বুঝতে পারছি। আমি আশা করছি যে ওখানে শীঘ্রই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠবে। বিশেষত ওখানকার হিন্দু এবং ওখানকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের সুরক্ষা যাতে সুনিশ্চিত হয়, সেটা চাইছেন ১৪০ কোটি দেশবাসী (ভারতবাসী)।
সেইসঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জানান, নয়াদিল্লি সবসময় চায় যে বাংলাদেশে উন্নয়ন হোক। উন্নয়নের পথে হেঁটে যাক বাংলাদেশ। মোদীর কথায়, ‘ভারত সবসময় চায় যে শান্তি-সমৃদ্ধির পথে চলুক আমাদের প্রতিবেশী দেশ। শান্তির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ আমরা। আগামিদিনে বাংলাদেশের বিকাশযাত্রার প্রতি আমাদের সর্বদা শুভকামনা থাকবে। কারণ আমরা মানবজাতির কল্যাণের বিষয়ে চিন্তিত।’ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে চলে যাওয়ার পর এ ইস্যুতে এটিই মোদির প্রথম বক্তব্য। এর আগে নিজেদের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য পক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করলেও মুখ খোলেননি মোদি।
মোদি বলেন, ১৪০ কোটি ভারতীয় হিন্দু বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। ভারত সর্বদা বাংলাদেশের অগ্রগতির শুভাকাঙ্খী হবে। আমরা আশা করছি, বাংলাদেশে পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে। ভারতীয়রা চায় হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান। এরপর ভিন্ন দেশে আশ্রয় প্রার্থনার গুঞ্জন উঠলেও এখন পর্যন্ত তিনি ভারতে আছেন। সেখানে কিছু দিন নিভৃতে কাটানোর পর স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি পাঠান। এ ছাড়া তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় তার ফেসবুক আইডিতে মায়ের বিবৃতি পোস্ট করেছেন।
বিষয়টি দুই নিকট প্রতিবেশী দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের অন্তরায় মনে করছে বাংলাদেশ সরকার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই বার্তা বুধবার ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের বিষয়টি ভারত নিশ্চিত করবে বলে আশা করছেন জয়। এ নিয়ে ছাত্র-জনতা সমালোচনামুখর। অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন।