বৃহস্পতিবার রাতে মণিপুরের জিরিবাম জেলায় বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি সশস্ত্র চরমপন্থীরা একজন আদিবাসী নারীকে গুলি করে পুড়িয়ে মেরেছে বলে অভিযোগ। যার জেরে ফের একবার অশান্ত হয়ে উঠেছে মণিপুর। হামার উপজাতীয় গ্রাম জাইরাউনে এই হামলা ফের একবার মণিপুরে সহিংসতা ফিরে আসার দিকে ইঙ্গিত করে। হামার জাতিগতভাবে কুকি-জো লোকেদের সাথে সম্পর্কিত, যারা ২০২৩ সালের ৩মে থেকে রাজ্যের মেইতেই সম্প্রদায়ের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গতকাল রাত ৯টার দিকে জেলা সদর দফতর জিরিবাম থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে গ্রামে জঙ্গিরা হামলা চালায়। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বন্দুকযুদ্ধ চলে। আদিবাসী উপজাতীয় নেতাদের ফোরাম (আইটিএলএফ) দাবি করেছে যে আক্রমণকারীরা জোসাংকিম হামার নামে ৩১ বছর বয়সী তিন সন্তানের মাকে জীবিত অবস্থায় পুড়িয়ে মারার আগে তাকে গুলি করে এবং ধরে নিয়ে যায়। তার স্বামী নুগুরথানসাং জানিয়েছেন - “জোসাংকিমের উরুতে একটি বুলেট লেগেছিল।
জোসাংকিম স্থানীয় হারমন ডিউ ইংলিশ জুনিয়র হাই স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন। 'আইটিএলএফ জানিয়েছে যে, আততায়ীরা নুগুরথানসাং-এর বৃদ্ধ বাবা-মা এবং চার থেকে আট বছর বয়সী তিন সন্তানকে চলে যেতে দিলেও তার স্ত্রী ছেড়ে দিতে অস্বীকার করে। শুক্রবার সকালে ওই নারীর পোড়া লাশ বাড়ির ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়। হামলাকারীরা কয়েকটি কুকুরকেও মেরে ফেলে এবং সাতটি দুচাকার গাড়ি নিয়ে যায়... হামলার সময় ১৭টি বাড়ি ও তিনটি দোকানে আগুন লাগিয়ে দেয়। একজন সিনিয়র অফিসার বলেছেন- ' বন্দুকযুদ্ধ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। তবে আমাদের কাছে হামলায় কোনো মৃত্যুর খবর নেই। আমরা খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত করছি।
'সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের একটি ভিডিওতে, কিছু নারীকে জোসাংকিম হামারের "পুড়ে যাওয়া দেহাবশেষ" বহন করতে দেখা গেছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিষয়টি নিশ্চিত করতে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল গ্রামে পাঠানো হয়েছে। মণিপুরের জাতিগত সহিংসতার জেরে ২০২৩ সালের মে থেকে এখনো পর্যন্ত ২৫০জনের মৃত্যু হয়েছে এবং কমপক্ষে ৬০,০০০ জন বাস্তুচ্যুত হয়েছে।