গত ১৭ এপ্রিল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্বোডিয়ার খেমার রুজের হাতে সংঘটিত ভয়াবহ গণহত্যার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রখ্যাত নৃবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. এলেক্স হিন্টনের নেতৃত্বে এই ভার্চুয়াল আলোচনায় উঠে এসেছে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের চিরন্তন পাঠ এবং বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে এর প্রাসঙ্গিকতা।

১৯৭৫ সালে পল পটের নেতৃত্বে খেমার রুজ কম্বোডিয়ার প্রায় এক-চতুর্থাংশ জনগোষ্ঠীকে হত্যা করেছিল - প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. রিজওয়ানুল ইসলাম তাঁর প্রারম্ভিক বক্তব্যে বলেন, "এই গণহত্যার বিচার শুরু হতে তিন দশক লেগেছে, যা দেখিয়ে দেয় কিভাবে রাজনৈতিক স্বার্থ বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে।"

অধ্যাপক হিন্টন তাঁর মূল বক্তব্যে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন কিভাবে গণতন্ত্রের অবক্ষয়, বিচার ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হ্রাস পেলে সমাজে গণহত্যার ঝুঁকি বাড়ে। তিনি গাজা, সোমালিয়াসহ বর্তমান বিশ্বের বিভিন্ন সংঘাতকে কম্বোডিয়ার ইতিহাসের আয়নায় বিশ্লেষণ করেছেন। "আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিষ্ক্রিয়তা আজও গণহত্যাকে প্রশ্রয় দিচ্ছে," মর্মস্পর্শী এই মন্তব্য করেন তিনি।

চীনের ভূমিকা নিয়েও তীব্র সমালোচনা করেন হিন্টন: "খেমার রুজকে পরোক্ষ সমর্থন দিয়ে চীন এই গণহত্যায় ভূমিকা রেখেছিল।" তবে আশার কথা শুনিয়েও তিনি বলেন কিভাবে গণহত্যা-পরবর্তী কম্বোডিয়া ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে।

শিক্ষার্থী, গবেষক ও সুধীজনের প্রাণবন্ত প্রশ্নোত্তর পর্বে উঠে আসে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন গণহত্যার সঙ্গে কম্বোডিয়ার অভিজ্ঞতার মিল-অমিল। এই ওয়েবিনার শুধু অতীতের স্মরণই নয়, বর্তমান বিশ্বে গণহত্যা প্রতিরোধে আমাদের দায়িত্ববোধকেও জাগ্রত করেছে।

#কম্বোডিয়া_গণহত্যা #খেমার_রুজ #মানবাধিকার #ইতিহাসের_পাঠ #নর্থ_সাউথ_বিশ্ববিদ্যালয়

news