ঐতিহাসিক পদক্ষেপ, পরীক্ষাকেন্দ্রে ছাত্রীদের পরনে আবায়া নিষিদ্ধ করল সৌদি আরব
হিজাব বিরোধিতা নিয়ে উত্তাল ইরান। সেই আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের নানা প্রান্তে। হিজাবের (Hijab) বিরোধিতা করে ইরান পুলিশের কড়া শাস্তির মুখে পড়েছেন কতশত মানুষ। কারও কারও প্রাণদণ্ড হয়েছে। রেয়াত করা হয়নি সেলিব্রিটিদেরও। এই অবস্থায় ইসলাম বিশ্বের আরেক দেশ সৌদি আরব (Saudi Arab) গ্রহণ করল ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। নারীদের সম্পূর্ণ শরীর ঢাকা পোশাকের পক্ষে হয়েও ছাত্রীদের জন্য আবায়া নিষিদ্ধ করল সে দেশের প্রশাসন। পরীক্ষাকেন্দ্রের (Examination hall) মধ্যে আপাদমস্তক ঢাকা ঢোলা পোশাকটি পরতে পারবে না ছাত্রীরা। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এমনই জানিয়েছে সৌদি এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং এভালুয়েশন কমিশন।
২০১৮ সালে নিয়ম শিথিলের পর থেকে আবায়া আর বাধ্যতামূলক নেই সৌদি আরবে। আর এবার পরীক্ষাকেন্দ্রে ছাত্রীদের পরনে আবায়া (Abaya) নিষিদ্ধ হল। আবায়া কী? বোরখার একটি অংশ আবায়া। লম্বা, ঢোলা আপাদমস্তক বহিরঙ্গের পোশাকটি আরব দেশগুলিতে মহিলা, পুরুষ উভয়েই পরে থাকেন। অনেকে হিজাবের নিচে পরেন আবায়া। কেউ আবার গোটা পোশাকটাই পরে থাকেন। ইসলামিক দুনিয়ায় এ এক বহু পরিচিত পোশাক। ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তানে মূলত বোরখা (Burqa) পরা হয়।
সৌদির শিক্ষামন্ত্রক সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, এডুকেশন ও ট্রেনিং কমিশনের তরফে পরীক্ষার হলে ছাত্রীরা আবায়া পরে ঢুকতে পারবেন না। এবার থেকে স্কুল ইউনিফর্মই পরতে হবে। তবে পথেঘাটে সৌজন্য বজায় রাখার জন্য আবায়া পরতে পারেন। আসলে প্রকাশ্যে সৌদি আরবের মহিলাদের সম্পূর্ণ শরীর ঢাকা পোশাক পরতে হয়। তবে সৌদি রাজপরিবার বেশ খানিকটা উদারপন্থী। সৌদি যুবরাজ তথা প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ বিন সলমনে নারী শিক্ষার বিস্তারে কাজ করেছেন। তিনি স্কুল, কলেজে মহিলাদের শিক্ষার পক্ষে।
শিক্ষাকেন্দ্রে হিজাব পরা নিয়ে এখনও স্থির সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি কেরলের প্রতিষ্ঠানগুলি। এই সংক্রান্ত মামলা এখনও বিচারাধীন সুপ্রিম কোর্টে। যদিও তারই মধ্যে কোনও কোনও স্কুল কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের হিজাব পরে স্কুল, কলেজে আসা নিষিদ্ধ করেছে। অন্যদিকে ইরানে হিজাব পরার বিরোধিতায় প্রতিবাদ চলছে। আন্তর্জাতিক মহলে সেই বিদ্রোহের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে। দুই বিপরীত চিত্রের মাঝে সৌদি আরবের ছাত্রীদের আবায়া নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিশ্চিতভাবে আলোচনা সাপেক্ষ।
সংবাদ প্রতিদিন/এনবিএস/২০২২/একে


