মার্কিন সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির নীতির কারণে পরমাণু আলোচনা মুখ থুবড়ে পড়েছে: আব্দুল্লাহিয়ান

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আব্দুল্লাহিয়ান বলেছেন, ইরানের ওপর আমেরিকার সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির ভুল নীতির কারণেই ভিয়েনায় পরমাণু আলোচনা মুখ থুবড়ে পড়েছে। তিনি গতরাতে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্থেনিও গুতেরেসের সঙ্গে টেলিফোনালাপে এ কথা বলেছেন।

এ সাক্ষাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লাহিয়ান ইউরোপের মধ্যমে ইরান ও আমেরিকার মধ্যে অব্যাহত বার্তা বিনিময়ের কথা উল্লেখ করে মার্কিন সিনেটে ইরান বিরোধী পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি আরো বলেছেন, ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই একটি সমঝোতায় পৌঁছতে হলে প্রয়োজন মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে সাহসী পদক্ষেপ এবং বাস্তব দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ যাতে তারা অতীত ভুল পুষিয়ে নিতে পারে।

গত বছর ২৭ ডিসেম্বর থেকে ভিয়েনায় ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার সংক্রান্ত অষ্টম দফা বৈঠক শুরু হয়। এরপর গত ১১ মার্চ ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেলের পরামর্শ অনুযায়ী আলোচনায় বিরতি দেয়া হয় এবং আলোচনাকারীরা পরামর্শ করার জন্য যে যার দেশে ফিরে  যান। এরপর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে আমেরিকা এখনো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়েছে।

পাশ্চাত্য বিশেষ করে আমেরিকার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অতীত অভিজ্ঞতার কারণে ইরান বারবার বলে আসছে এবারের নতুন সমঝোতা বাস্তবায়নের গ্যারান্টি থাকতে হবে যাতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিষয়ে ইরান নিশ্চিত হতে পারে ও দেশটির অর্থনৈতিক স্বার্থ নিশ্চিত হয় এবং পাশ্চাত্যেরও ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ব্যাপারে উদ্বেগ দূর হয়। এ লক্ষ্যে ইরান প্রতিপক্ষকে বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেছিল এবং নিজের রেড লাইনের বিষয়টিও তাদেরকে অবহিত করেছিল।

সবাই যখন আশা করেছিল ওয়াশিংটন পরমাণু সমঝোতা টিকিয়ে রাখার জন্য দৃঢ় রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেবে কিন্তু দেখা গেল মার্কিন সিনেট ইরানের কেন্দ্রিয় ব্যাংক ও ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর বিরুদ্ধে আরোপিত বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইরানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক হানিফ গাফারি বলেছেন, সিনেটে ইরান বিরোধী নতুন সিদ্ধান্ত অনুমোদনের ব্যাপারে ডেমোক্রেটে ও রিপাবলিক দলের অভিন্ন অবস্থান থেকে বোঝা যায় পরমাণু সমঝোতায় ফিরে আসাকে তারা গুরুত্ব দিচ্ছে না।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরানের বিরুদ্ধে অব্যাহত নিষেধাজ্ঞা এবং ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার স্বেচ্ছাচারিতা ও সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির চেষ্টার কারণে ভিয়েনা আলোচনা এখন পর্যন্ত সফলতার মুখ দেখেনি। হোয়াইট হাউজের একজন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে মার্কিন সাময়িকী পলিটিকো জানিয়েছে ওয়াশিংটনের টার্গেট হচ্ছে যতদিন পর্যন্ত ইরান পরমাণু সমঝোতার বাইরে আমেরিকার চাপিয়ে দেয়া অন্য দাবি দাওয়া পূরণ না করবে ততদিন পর্যন্ত ইরানের আইআরজিসিকে সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দেয়া হবে না এবং নিষেধাজ্ঞা বলবত থাকবে।

প্রকৃতপক্ষে, আমেরিকা ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতাকে সীমিত করার দাবি জানিয়ে আসছে অথচ পরমাণু সমঝোতার সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই।খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে

news