গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তবে তাদের উদ্দেশ্য, লক্ষ্য ও পথচলা নিয়ে কিছু সংশয়ও প্রকাশ করেছেন তারা।  

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, "বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বিএনপি সব নতুন রাজনৈতিক দলকে স্বাগত জানায়। তবে জনগণই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।" তিনি আরও যোগ করেন, নতুন দল গঠনের উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন, তবে তাদের লক্ষ্য ও আদর্শ স্পষ্ট হওয়া জরুরি।  

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, "নতুন দলের আদর্শ, উদ্দেশ্য ও গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে এখনো কিছুই স্পষ্ট নয়। তারা কী পুঁজিবাদ নাকি সমাজতন্ত্রের পক্ষে? শোষক নাকি মেহনতি মানুষের পক্ষে? এগুলো পরিষ্কার না হলে তাদের ভূমিকা বোঝা কঠিন।" তবে তিনি এও বলেছেন, প্রতিটি নাগরিকের রাজনৈতিক দল গঠনের অধিকার আছে এবং তিনি এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান।  

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, "রাজনীতিতে নতুন দলের আগমন ইতিবাচক চ্যালেঞ্জ। জনগণের চিন্তা ও দর্শনকে লালন করতে পারলে নতুন দল দেশের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনতে পারে।"  

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, "বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন দল গঠন ভালো, তবে তাদের উদ্দেশ্য ও মর্যাদা স্পষ্ট হওয়া জরুরি। ছাত্রদের প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে তারা কী ভূমিকা রাখবেন, তা পরিষ্কার করা দরকার।"  

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, "তারা যদি রাজনীতি করতে চান, তাহলে এতদিন কেন প্রকাশ্যে আসেননি? তাদের একইসঙ্গে তিনটি সংগঠন গঠনের পরিকল্পনা ট্রাডিশনাল রাজনীতির সঙ্গে যায় না। তবে যত বেশি মানুষ রাজনীতিতে আসবেন, ততই দেশের মঙ্গল। শর্ত হচ্ছে, রাজনীতি ইতিবাচক হতে হবে।"  

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, "নতুন দল যদি গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করে ইতিবাচক রাজনীতি করে, গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িকতা চর্চা করে, তাহলে তা বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।"  

নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের এই উদ্যোগকে অনেকেই ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও তাদের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কর্মপন্থা স্পষ্ট না হওয়ায় কিছু সংশয়ও প্রকাশ করেছেন রাজনীতিবিদরা। আগামী দিনে তাদের কর্মকাণ্ডই প্রমাণ করবে, তারা দেশের রাজনীতিতে কী ধরনের ভূমিকা রাখতে পারেন।

news