ম্যাক্স গ্রুপ জাতীয় সাঁতার, ডাইভিং ও ওয়াটারপোলো প্রতিযোগিতা ২০টি নতুন জাতীয় রেকর্ডের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। তিন দিনের এই আসরে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ৩৫টি স্বর্ণ, ২৩টি রৌপ্য এবং ১১টি ব্রোঞ্জসহ মোট ৬৯টি পদক জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ১০টি স্বর্ণ, ২১টি রৌপ্য ও ২৯টি ব্রোঞ্জ পদক নিয়ে রানার্স-আপ এবং বিকেএসপি ৪টি স্বর্ণ, ৫টি রৌপ্য ও ৯টি ব্রোঞ্জ পদক নিয়ে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। বাংলাদেশ পুলিশ ওয়াটারপোলোতে ১টি ব্রোঞ্জ পদক পেয়ে চতুর্থ হয়েছে।

মিরপুর জাতীয় সুইমিং কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতার শেষ দিনে সাঁতারে ৯টি ইভেন্ট হয়, যার মধ্যে ৫টিতে নতুন জাতীয় রেকর্ড স্থাপিত হয়েছে।

গত তিন দিনে নৌবাহিনীর সামিউল ইসলাম রাফি রেকর্ডের ঝড় তুললেও শেষ দিনে সবার নজর কেড়েছেন তাঁর সতীর্থ কাজল মিয়া। তিনি দুটি ইভেন্টে নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়েন। ৪০০ মিটার ব্যক্তিগত মিডলেতে ৪ মিনিট ৩৯.৮৬ সেকেন্ড সময় নিয়ে তিনি জুয়েল আহমেদের ২০২৲ সালের রেকর্ড (৪ মিনিট ৪৬.১৩ সেকেন্ড) ভেঙেছেন। একই দিনে ৪০০ মিটার ফ্রি স্টাইলে গত বছরের নিজের রেকর্ড ভেঙে ৪ মিনিট ৬.৪৪ সেকেন্ডে নতুন রেকর্ড গড়েন।

এবারের প্রতিযোগিতায় কাজল মিয়া মোট চারটি নতুন জাতীয় রেকর্ড করেছেন। তবে শেষ দিনে সামিউল ইসলাম রাফি ৫০ মিটার ফ্রি স্টাইলে সতীর্থ আসিফ রেজার কাছে হেরে দ্বিতীয় হন।
নারী সাঁতারুদের মধ্যেও নতুন রেকর্ডের দেখা মিলেছে। বিকেএসপির জুঁই আক্তার ৪০০ মিটার ব্যক্তিগত মিডলেতে ৫ মিনিট ৩৭.০১ সেকেন্ড সময় নিয়ে নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়েন। এছাড়া নৌবাহিনীর যুথী আক্তার নারীদের ৫০ মিটার ফ্রি স্টাইলে এবং চার গুণিতক ১০০ মিটার মিডলে রিলেতে নতুন রেকর্ড স্থাপন করেন।

রেকর্ডের ধারাবাহিকতায় পুরুষ বিভাগে নৌবাহিনীর সামিউল ইসলাম রাফি ৬টি স্বর্ণ ও ১টি রৌপ্য পদকসহ (৬টি নতুন জাতীয় রেকর্ড) ‘সেরা সাঁতারু’ নির্বাচিত হন। নারী বিভাগে সেনাবাহিনীর রোমানা আক্তার ৫টি স্বর্ণ ও ৩টি রৌপ্য পদক (৩টি নতুন জাতীয় রেকর্ড) নিয়ে সেরা সাঁতারু হন।
ডাইভিংয়ে পুরুষ বিভাগে নৌবাহিনীর ইমন হোসেন ১টি স্বর্ণ ও ১টি রৌপ্য পদক পেয়ে সেরা খেলোয়াড় এবং নারী বিভাগে বিকেএসপির নন্দিনী পাহান ৩টি স্বর্ণ পদক নিয়ে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন।

ওয়াটারপোলোতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী চ্যাম্পিয়ন এবং নৌবাহিনী রানার্স-আপ হয়েছে। ডাইভিংয়ে নৌবাহিনী চ্যাম্পিয়ন এবং বিকেএসপি রানার্স-আপ হয়েছে।

প্রতিযোগিতা শেষে সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের সভাপতি ও নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান। তিনি বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌবাহিনী প্রধান বলেন, “সুইমিং ফেডারেশনের প্রচেষ্টায় আমাদের সাঁতারুরা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে। আশা করি, সামনে আমরা আরও ভালো ফলাফল করতে পারব। এসএ গেমসে ভালো করার জন্য আমাদের প্রশিক্ষণ চলছে। উন্নত প্রশিক্ষণ পেলে আমাদের সাঁতারুরা আরও ভালো করবে।

 এবার ২০টি ইভেন্টে নতুন জাতীয় রেকর্ড হয়েছে, যা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। ম্যাক্স গ্রুপকে এই প্রতিযোগিতায় পৃষ্ঠপোষকতার জন্য ধন্যবাদ জানাই এবং আশা করি অন্য প্রতিষ্ঠানও আমাদের পাশে থাকবে।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর। স্বাগত বক্তব্য দেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শাহীন।