মধ্যপ্রাচ্যকে ‘বড় যুদ্ধের’ দিকে ঠেলে দিচ্ছে পশ্চিম: রাশিয়া

হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান হামলায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেছে রাশিয়া। মস্কো বলেছে, পশ্চিমা বিশ্ব বিশ্ব মধ্যপ্রাচ্যকে বড় যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ সোমবার মস্কোতে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেছেন।

সের্গেই ল্যাভরভ এ সম্পর্কে বলেন, ‘অ্যাংলো-স্যাক্সনরা (পাশ্চাত্য) কীভাবে মধ্যপ্রাচ্যকে বড় যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, আমরা এখন তা দেখতে পাচ্ছি। এর আগে তারা ইউক্রেন, ইরাক ও সিরিয়াতেও একই ধরণের ভূমিকা নিয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘তাদের এই নীতির কারণে যুদ্ধের প্রাণহানি ক্ষয়ক্ষতি তো রয়েছেই, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সন্ত্রাসবাদ ও ধর্মীয় মৌলবাদ, শরণার্থী সমস্যা, অভিবাসী সংকট ও বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা।’

গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী স্বাধীনতার জন্য লড়াইরত গ্রুপ ফিলিস্তিনি ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চলানোর পর সে দিন থেকেই গাজায় প্রতিশোধমূলক ভয়াবহ হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এক মাস পার হওয়ার পরও সেই এখনও চলছে।

হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি। এছাড়া ২৩৪ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে গেছে হামাস।

অন্যদিকে, ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর অভিযানে গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১০০২২ জন। নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি শিশু ও নারী।

আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, ১৯৫৩ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর এই প্রথম মধ্যপ্রাচ্যের আল-আকসা অঞ্চলে ভয়াবহ হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর হামলায় গত এক মাসে গাজা উপত্যকায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন অন্তত ১৫ লাখ মানুষ। তাদের মধ্যে প্রায় ৬ লাখ ৭০ হাজার মানুষ জাতিসংঘের ত্রান ও পুর্ত সংস্থা (আনরোয়া) পরিচালিত স্কুলগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন।

ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাসকে পুরোপুরি নির্মূল করার আগ পর্যন্ত এই যুদ্ধ তারা থামাবে না। যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা ইসরায়েলের এই অবস্থানকে সমর্থনও করেছে। তবে রাশিয়া, চীন, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চল এবং জাতিসংঘ শুরু থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে আসছে।

ল্যাভরভ বলেন, ‘পশ্চিমারা যুদ্ধের বিস্তার চায়, কারণ তারা অন্যদের দুুর্দশার বিনিময়ে নিজেদের সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করে। তারা অন্য দেশের মানুষের অর্থ-সম্পদ আত্মসাতে অভ্যস্থ হয়ে পড়েছে কিন্তু এখন এটা আর সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, তিনি বলেন, ন্যাটো জোট এখন ‘অতীত স্মৃতিচিহ্নে’ পরিণত হয়েছে। সারা বিশ্বে জোটটি ‘তার কর্ষিকা ছড়াচ্ছে’ যা তাদের ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ল্যাভরভ বলেন, আপনারা নির্লজ্জভাবে কারো ওপর অব্যাহতভাবে আধিপত্য বিস্তার করতে পারবেন না। সেই সময় আর নেই।’সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি

news