ইসলামী ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, মার্কিন সরকার দেশটির মুদ্রা ডলারের ওপর নির্ভরশীলতাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে, তাই ডলারমুক্ত অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা বিশ্বের প্রায় সব দেশ, বিশেষ করে মুক্তিকামী জাতিগুলোর দাবি।
কয়েকদিন আগে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি নিউইয়র্কে ব্রিকস জোটের এক বৈঠকে বলেছেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে বর্তমান বিশ্ব-অর্থনৈতিক কাঠামো ভয়ানকভাবে এমন কয়েকটি শক্তির হাতের মুঠোয় রয়েছে যে তারা এই কাঠামোকে প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
ওই বৈঠকে আরাকচি জোর দিয়ে বলেছেন যে ডলারের ওপর দেশগুলোর নির্ভরতার বিষয়কে শোষণের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছে মার্কিন সরকার। এ ছাড়াও ব্যাংকিং সীমাবদ্ধতা, আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় বৈষম্য, অন্যদের মতামত তথা বেশিরভাগের মতামতকে উপেক্ষা করা এবং এ ধরনের আরও অনেক বিষয়কে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে মার্কিন সরকার।
ডলারমুক্ত অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা বিশ্বের প্রায় সব দেশ, বিশেষ করে মুক্তিকামী জাতিগুলোর দাবি বলে মনে করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাকচি।
এর আগে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল বা আইএমএফ-এ নিযুক্ত ব্রাজিলের সাবেক প্রতিনিধি পাওলো.এন.বাতিস্তা আর টি (রাশিয়া টুডে) টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মার্কিন ডলার একটি বিপজ্জনক মুদ্রায় পরিণত হয়েছে।
ওই সাক্ষাৎকারে বাতিস্তা বলেছেন, বৈশ্বিক রিজার্ভ কারেন্সি হিসেবে ডলারের ওপর আস্থা দিনকে দিন কমে যাচ্ছে এবং বহু দেশ এখন ডলারের বিকল্পের অনুসন্ধান করছেন। ফলে এই প্রবণতা বি-ডলারিকরণের এক বড় আন্দোলনের রূপ নিয়েছে।
একই প্রসঙ্গে ইরানের সংসদের শিল্প ও খনিজ বিষয়ক কমিশন বা কমিটির সদস্য আলী হাদ্দাদি মনে করেন যদি সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা ও ব্রিকস জোটের সদস্য দেশগুলো বি-ডলারিকরণ কার্যকর করতে থাকে তাহলে মার্কিন সরকারের একাধিপত্য বাধাগ্রস্ত হবে এবং ডলারের ভূমিকা ম্লান হয়ে আসায় এইসব দেশের শক্তি জোরদার হবে। উল্লেখ্য, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়িও বি-ডলারিকরণের ওপর জোর দিয়ে আসছেন।
এ ছাড়াও পশ্চিমা মিডিয়াগুলোও বিশ্ব-অর্থনীতিতে ডলারের প্রভাব ক্রমেই ম্লান হচ্ছে বলে উল্লেখ করছে এবং আন্তর্জাতিক লেনদেনে বিশ্বের দেশগুলোর নিজস্ব মুদ্রা-বিনিময়ের মাত্রা খুব দ্রুত গতিতে বাড়ছে। এ প্রসঙ্গে সিএনবিসি'র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক রিপোর্টেও বলা হয়েছে বাণিজ্যে মার্কিন মুদ্রা বাদ দেয়ার আহবান ক্রমেই জোরদার হচ্ছে এবং দিনকে দিন ব্রাজিল থেকে শুরু করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশ মার্কিন মুদ্রা ডলার বাদ দিয়েই বাণিজ্য করতে চাচ্ছে।
পার্সটুডে